বরিশালের বাকেরগঞ্জে বসতঘরে মেঝে খুঁড়ে পাওয়া কঙ্কালটি নিখোঁজ বিধবা রিজিয়া বেগমের (৬০)। এর আগে বুধবার উপজেলার চরামদ্দি ইউনিয়নের মধ্য কাটাখালী গ্রামে তার নিজ ঘরে পুঁতে রাখা কঙ্কালটি উদ্ধার করা হয়। তিনি সাত মাস আগে ছেলে রাসেল গাজীর দুই বন্ধুর ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হন।
ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরদেহ মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছিল। ঢাকায় বসবাস করা একমাত্র সন্তান ছয় মাসেও মায়ের খোঁজ না নেয়ায় এতদিন ঘটনাটি জানাজানি হয়নি। পুলিশ দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। রোববার (২১ এপ্রিল) জেলা পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছে।
গ্রেপ্তার অভিযুক্তরা হলো- মধ্য কাটাদিয়া গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে ফয়সাল (৩৫) ও একই গ্রামের মৃত কালাম হাওলাদারের ছেলে লালচাঁন (৩২)।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার লাশ উত্তোলনের তিন দিনের মধ্যে ফয়সালকে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এবং তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, মধ্য কাটাদিয়া গ্রাম থেকে লালচাঁনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আসামিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ৩টার দিকে ফয়সাল ও লালচাঁন রিজিয়া বেগমের ঘরে জোরপূর্বক প্রবেশ করে। ফয়সাল বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করে। পরে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যার পর ঘরের মেঝেতে লাশ পুঁতে রাখে। তারা দু’জন রিজিয়া বেগমের ছেলে রাসেল গাজীর বন্ধু। একসঙ্গে মাদক সেবন করত। পরে রাসেল ঢাকায় চলে গেলে তারা রিজিয়া বেগমের ঘরে বসে নিয়মিত মাদক সেবন করত। তাদের বারবার নিষেধ করতেন বৃদ্ধা রিজিয়া। এতে ছেলের বন্ধুরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজওয়ান আহমেদ জানান, বৃদ্ধার মাদকাসক্ত ছেলে রাসেল গাজী অসুস্থ প্রকৃতির। এ কারণে ঢাকায় থেকে গত ছয় মাসেও মায়ের খোঁজখবর রাখেনি। ফলে হত্যাকাণ্ডটি ধামাচাপা ছিল। ঈদ উপলক্ষে ১৩ এপ্রিল রাসেল বাড়িতে ফিরে মাটিচাপা দেয়া মায়ের কঙ্কাল আবিষ্কার করেন। ময়নাতদন্তের জন্য আদালতের অনুমতিতে বুধবার পুলিশ কঙ্কাল উদ্ধার করে।
নিহত রিজিয়া বেগম মধ্য কাটাখালী গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী। তার একমাত্র ছেলে রাসেল গাজী স্ত্রীসহ ঢাকায় থাকতেন। তার বক্তব্য অনুযায়ী, সর্বশেষ প্রায় ছয় মাস আগে মায়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হয়েছিল। ১৩ এপ্রিল বাড়িতে ফিরে ঘর তালা দেয়া দেখতে পান। ঘরের একাংশ ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে মেঝেতে একটি অংশ লেপ ও কাঠের গুঁড়ির কিছু অংশ দিয়ে ঢাকা দেখে সন্দেহ হয়। সেগুলো সরিয়ে কবরসদৃশ্য কিছু দেখতে পান। পরে মাটি খুঁড়ে কঙ্কাল দেখতে পান। এ ঘটনায় রিজিয়া বেগমের ছোট ভাই হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বাকেরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |