আওয়ামী লীগ শাসনামলে ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরে ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেত্রীকে ছাত্রলীগ নেত্রীর তকমা দিয়ে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জান্নাতুল নওরীন উর্মী নামের এক ছাত্রী। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
জান্নাতুল নওরীন উর্মী বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) গণিত বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক।
তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রপূর্বক বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দেওয়ার তথ্য উন্মোচন করেন। অভিযোগে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে প্রকাশ্যে তিন জনসহ আরও আট শিক্ষার্থী মোবাইল ফোনে বলেছেন, তাদেরকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতারণাপূর্বক স্বাক্ষর নিয়েছে। আবার কারও স্বাক্ষর বিশ্বস্ততার সুযোগে নিয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে উর্মী বলেন, ২০২০ সালের ১ মার্চ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে আমার ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা হলেন- ববির সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আলীম সালেহীন, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম, আবদুল্লাহ ফিরোজ ও পঞ্চম ব্যাচের হাফিজ ও আসাদুজ্জামান আসাদ।
তার দাবি, তারা জ্যামিতি বক্সের কম্পাস দিয়ে তার বুকে ও গলায়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। যে চিহ্ন এখনও শরীরে রয়েছে। আওয়ামী লীগ শাসনামলে বিচার চেয়ে পাননি। এমনকি নিয়মিত পড়াশোনাসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেয়নি। তখন ববির ছাত্রদলের পক্ষ থেকে কোনও ভূমিকা নেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, গত ৮ অক্টোবর বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী মিনহাজ সাগর চাঁদাবাজির অভিযোগে ববির ছাত্রদল থেকে বহিষ্কার হন। পরীক্ষায় নকল করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ার পর তার ফলাফল স্থগিত করা হয়। মিনহাজ সাগর তার ফেসবুক আইডিতে তাকে (উর্মী) নিয়ে অশ্লীল ভাষায় লেখালেখি করেছে। যে কারণে সাইবার নিরাপত্তা আইনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
উর্মীর দাবি, ক্যাম্পাসে মিনহাজ সাগর এখনও কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছেন। তার প্রধান সহযোগী হলো- বাংলা বিভাগের ৮ম ব্যাচের গোলাম রসুল, লোক প্রশাসন বিভাগের ১০ম ব্যাচের আব্দুর রহিম, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ৮ম ব্যাচের মুজাহিদসহ একটি মদতদাতা চাঁদাবাজ চক্র।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার (৬ নভেম্বর) উর্মীর বিরুদ্ধে ববির উপাচার্য বরাবর ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের (ছাত্রলীগ) সন্ত্রাসী কর্মীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল করার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে’ শতাধিক শিক্ষার্থী স্বাক্ষরিত লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়- ছাত্রলীগ কর্মীদের নিয়ে আমি ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা করি। অথচ উর্মী ছাত্রলীগ কর্তৃক নির্যাতিত এবং জীবন থেকে লেখাপড়া বঞ্চিত হবার উপক্রম।
উর্মী দাবি করেন, আবেদনপত্রটি ছিল ‘ছাত্রলীগের পুনর্বাসন ও ছাত্র রাজনীতি চাই না’। এ আবেদনে স্বাক্ষর নিয়ে উপরের পৃষ্ঠা পরিবর্তন করা হয়। স্বাক্ষরকারী শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন, আরিফুল ইসলাম তাকে উপরের পৃষ্ঠা পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করে। পরে মোবাইল ফোনে একাধিক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জানতে পারেন, আবেদনপত্রটি পরিবর্তন করা হয়েছে। যার তথ্য প্রমাণ তার কাছে রয়েছে।
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |