প্রচ্ছদ আবহাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ আঘাত হানতে পারে যেসব জেলায়: সতর্কতা জারি

ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ আঘাত হানতে পারে যেসব জেলায়: সতর্কতা জারি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নতুন শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ ধেয়ে আসছে বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূলের দিকে। আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা, মে মাসের শেষ সপ্তাহে এই ঘূর্ণিঝড় দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাবে বিভিন্ন জেলায় ইতোমধ্যেই টানা বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, ইউরোপিয়ান ও আমেরিকান আবহাওয়া মডেল অনুযায়ী, ২৭ বা ২৮ মে ভারতের উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে একটি লঘুচাপ বা নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যা পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

তিনি আরও জানান, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ২৯ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত বাংলাদেশে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কোনো কোনো স্থানে ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। একই সময়ে ভারতের আসাম ও মেঘালয়েও ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের কোন অংশ দিয়ে বাংলাদেশের ভূভাগে প্রবেশ করবে, তার উপর নির্ভর করবে কোন অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে।

খুলনা উপকূল দিয়ে ঢুকলে: ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগ সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। ২৭ মে নাগাদ উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে। একই সময়ে আরব সাগরে ‘মন্থা’ নামের আরেকটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাসও রয়েছে।

সরকার এবং বিভিন্ন মানবিক সংস্থা ইতোমধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলে সতর্কতা জারি করেছে। সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত করা হয়েছে, উদ্ধারকারী দলগুলোকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষজনকেও সতর্ক ও সচেতন থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ও তীব্রতা ক্রমেই বাড়ছে, যা উপকূলীয় জনগণের জন্য নতুন করে ঝুঁকি তৈরি করছে।