
সন্তান নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিলে কয়েক মাস আগে থেকেই কিছু প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। গর্ভধারণের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় সময় বা ফারটাইল উইন্ডো চেনার অনেকগুলো পদ্ধতি আছে। একাধিক পদ্ধতি একত্রে ব্যবহার করলে গর্ভধারণের সঠিক সময় জেনে নেওয়া যায়। এই সময়ে সহবাসে দ্রুত গর্ভধারণের সম্ভাবনা বাড়ে।
যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজের চিকিৎসক ও সহায় হেলথের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডা. তাসনিম জারা সম্প্রতি তার এক ভিডিওতে জানান, সন্তান নেওয়ার আগের প্রস্তুতি সম্পর্কে।
এতে গর্ভবতী হওয়ার সবচেয়ে সম্ভাবনাময় সময় নির্ণয় করার পদ্ধতিগুলো ও পিরিয়ডের কতদিন পর সহবাস করলে সন্তান হয়— তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বাচ্চা নেওয়ার জন্য কত বছর বয়স থেকে চেষ্টা করবেন সেটি জানতে সন্তান নেওয়ার সঠিক বয়স আর্টিকেলটি পড়ে নিতে পারেন।
১. সাদা স্রাব পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে গর্ভধারণের সঠিক সময় জানা
এই পদ্ধতি কাদের জন্য প্রযোজ্য?
মাসিক নিয়মিত বা অনিয়মিত যেমনি হোক, সবাই সাদাস্রাবের এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারবেন। তবে যাদের মাসিক অনিয়মিত, তাদের জন্য এটা খুব উপকারী। কারণ অন্যান্য পদ্ধতিতে তাদের গর্ভধারণের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় সময় বের করা একটু কঠিন।
সাদা স্রাব পর্যবেক্ষণের পদ্ধতি
প্রতি মাসে মেয়েদের সাদা স্রাবের চার রকমের অবস্থা দেখা যায়।
১) প্রথম অবস্থা হচ্ছে মাসিকের ঠিক পরে যখন কোন সাদাস্রাব দেখা যায় না। মাসিকের রাস্তাটা খুব শুকনা শুকনা মনে হয়, তখন গর্ভধারণের সম্ভাবনা প্রায় শূন্যের কাছাকাছি (০.৩ শতাংশ)।
২) এর পরের অবস্থায় মাসিকের রাস্তা হাল্কা ভেজা মনে হয়, কিন্তু আপনি চোখে কোন সাদাস্রাব দেখেন না বা হাতেও ধরতে পারেন না, তখন গর্ভধারণের সম্ভাবনা থাকে ১ শতাংশের একটু বেশি (১ দশমিক ৩ শতাংশ)।
প্রথম এই দুই অবস্থা সবার মধ্যে দেখা যায় না। বিশেষ করে যাদের মাসিকের সাইকেল ছোট, তাদের ক্ষেত্রে এই দুইটি অবস্থা মাসিকের সময়েই হয়ে যেতে পারে।
তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থা প্রায় সবার ক্ষেত্রেই দেখা যায়।
৩) তৃতীয় অবস্থায় ঘন সাদাস্রাব যায়। সেটা আঙ্গুলের সঙ্গে আঠালো হয়ে লেগে থাকে। তখন গর্ভধারণের সম্ভাবনা বেড়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশের কাছে চলে আসে।
৪) চতুর্থ অবস্থায় সাদাস্রাব খুব পাতলা এবং পিচ্ছিল হয়। কাচা ডিমের সাদা অংশ যেমন মসৃণ আর পিচ্ছিল হয়, কিছুটা তেমন। দেখতে স্বচ্ছ। আর সেই সাদাস্রাব দুই আঙ্গুল দিয়ে টেনে বড় করা যায়। কয়েক ইঞ্চি বড় করলেও ভাঙ্গে না। তখন গর্ভধারণের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৩০ শতাংশের কাছাকাছি চলে আসে।
এই চতুর্থ অবস্থা শেষ হওয়ার পর আবার সাদাস্রাব ঘন আঠালো হয় বা একেবারেই আর কোন সাদাস্রাব যায় না। তবে অনেকের মাসিকের ঠিক আগে আগে আবার পাতলা সাদাস্রাব যেতে পারে, তবে সেটা গর্ভধারণের সাথে সম্পর্কিত নয়।
এই পদ্ধতি কীভাবে কাজে লাগাবেন?
যেদিন থেকে সাদাস্রাব দেখছেন, সেদিন থেক শুরু করে শেষ যেদিন পাতলা পিচ্ছিল সাদাস্রাব যাবে সেদিন সহ, তার পরের ৩ দিন—এই সময়টা বাচ্চা নেয়ার জন্য চেষ্টা করার ভালো সময়।
সাদা স্রাবে পরিবর্তন আসে কেন?
কিছু কিছু কারণে সাদা স্রাবের পরিবর্তন আসে, ফলে এই পদ্ধতি কখনো কম কার্যকরী হতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে—
সহবাস
সহবাসের সময় লুব্রিকেন্ট বা পিচ্ছিলকারী কোন কিছু ব্যবহার করা
কিছু ওষুধ
শিশুকে বুকের দুধ পান করানো
জন্ম-নিয়ন্ত্রণ পিল সেবন করা
জরাযুমুখের কোনো অপারেশন
যোনিপথের কোনো ইনফেকশন
২. শরীরের তাপমাত্রা মেপে গর্ভধারণের সঠিক সময় জানা
দ্বিতীয় পদ্ধতিটা হলো শরীরের তাপমাত্রা মেপে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় সময় বোঝা।