
দীর্ঘ প্রতীক্ষা ও নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জোটের শীর্ষ নেতৃত্ব তার হাতেই ধানের শীষের প্রতীক তুলে দিয়েছে। তবে এ আসনে লড়াই করতে চেয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আপন ভাগ্নে প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন।
জানা যায়, আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে ৪টি আসনে সমঝোতা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নীলফামারী-১ আসনে জোট প্রার্থী হিসেবে মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর নাম ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত ও অপরিবর্তনীয়। দলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
তবে স্থানীয় নেতাকর্মীদের একটি বড় অংশের প্রত্যাশা ছিল, নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনে নীলফামারী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়ন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকায় অনেক নেতাকর্মী তাকে এই আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে মনোনয়ন না দেওয়ায় বিএনপির একটি অংশের নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
নীলফামারী-১ আসনের জোট প্রার্থী কে হচ্ছেন— এ নিয়ে ডোমার ও ডিমলা উপজেলায় কয়েক দিন ধরেই রাজনৈতিক মহলে তুমুল আলোচনা চলছিল। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত হাইকমান্ড আস্থা রাখলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের হেভিওয়েট নেতা মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর ওপর।
মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার খবরে নীলফামারী-১ আসনের জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঙ্গাভাব লক্ষ্য করা গেছে।
স্থানীয় অনেকের মতে, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী একজন পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির জাতীয় নেতা। তিনি জোটের প্রার্থী হওয়ায় এই আসনে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে বিএনপি ও শরিক দলের নেতাকর্মীরা সম্মিলিতভাবে কাজ করবেন।
জোট প্রার্থী হয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, ‘জোটের শীর্ষ নেতৃত্ব আমার ওপর যে আস্থা রেখেছেন, ইনশাআল্লাহ ডোমার-ডিমলার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমি তার যথাযথ প্রতিদান দেব। এই বিজয় হবে গণতন্ত্রকামী মানুষের বিজয়।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নীলফামারী-১ আসনটি রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হলেও জোটের ঐক্য এবং সংগঠিত প্রচারণা এ আসনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী ১৫ নভেম্বর ১৯৬৮ সালে নীলফামারী জেলার ডোমার থানার অন্তর্গত সোনারায় গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আলহাজ মো. রশিদুল হাসান ছিলেন সোনারায় ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান। সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও গভীর ধর্মভীরুতার জন্য তিনি এলাকায় একজন অত্যন্ত সম্মানিত ও অনন্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
মাওলানা আফেন্দী বর্তমানে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া ইসলামী রাজনীতিতে একজন প্রভাবশালী সংগঠক ও চিন্তাবিদ হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত তিনি।
সূত্র : কালবেলা












































