প্রচ্ছদ আর্ন্তজাতিক কে এই ভোলে বাবা, যার অনুষ্ঠানে নিহত ১২০ ভক্ত (ভিডিও)

কে এই ভোলে বাবা, যার অনুষ্ঠানে নিহত ১২০ ভক্ত (ভিডিও)

তীব্র গরমের মধ্যে চলছিলো সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান। তখন তাঁবুর ভেতরে একেবারে গলদঘর্ম অবস্থা। সৎসঙ্গ শেষ হওয়ার পরই হুড়মুড় করে বেরোতে যান ভক্তরা। আর তখনই ঘটে পদপিষ্টের ঘটনা। এমনই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সাক্ষী হলো ভারতের উত্তর প্রদেশের হাথরাস এলাকা।

প্রাণ হারানো এসব মানুষ গিয়েছিলেন ভোলে বাবা নামক এক কথিত ধর্মগুরুর অনুষ্ঠানে। এই ভোলে বাবা নারায়ণ সরকার হরি নামেও পরিচিত। এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোলে বাবা প্রায়ই তার ভক্তদের কাছে দাবি করে থাকেন তিনি গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেছেন। তিনি ভক্তদের আরও বলে থাকেন, গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার সময়ই আধ্যাত্মিক চর্চায় ঝুঁকে পড়েন।

সংবাদমাধ্যম সূত্রের জানা যাচ্ছে, এই ধর্মগুরুর আসল নাম সুরজ পাল। কাসগঞ্জের পাটিয়ালি বাহাদুর গ্রামের বাসিন্দা তিনি। সেখানেই রয়েছে তার মূল আশ্রম। একটা সময়ে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে চাকরি করতেন তিনি। ১৮ বছর আগে চাকরি জীবন থেকে স্বেচ্ছাবসরে যান এবং বাড়ি ছেড়ে নিজ গ্রামে একটি ঝুপড়ি তৈরি করে সেখানেই থাকতে শুরু করেন। এর পর গ্রামে গ্রামে গিয়ে ঈশ্বরের নামে প্রচার শুরু করেন তিনি।

ধর্ম প্রচারে গিয়ে প্রচুর টাকা অনুদান পেতে থাকেন সুরজ। সেই টাকায় জায়গায় জায়গায় সৎসঙ্গের আয়োজন করতে থাকেন তিনি। এভাবেই বাড়তে থাকে সুরজের ভক্তের সংখ্যা। বাবা কোনো গুরুর অনুসারী নন বলে বিশ্বাস করা হয়। তার দাবি, যেসব উপদেশ তিনি দেন, সেগুলো সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে আসা। তার সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে অনেক সংসদ সদস্য ও বিধানসভার সদস্য যোগ দেন বলে মনে করা হয়। শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ-সহ একাধিক রাজ্যে ছড়িয়ে রয়েছে তার ভক্তের সংখ্যা।তবে এত জনপ্রিয়তার পরও গণমাধ্যম থেকে দূরে রাখা হয় বাবার সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান। বাবার সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্যও সামনে আসে না।

জানা যায়, শুরু থেকেই সাদা শার্ট-প্যান্ট পরে চেয়ারে বসেই ভক্তদের প্রবচন দিতেন ভোলে বাবা। ভোলে বাবার লোকেরা গোলাপি রঙের শার্ট প্যান্ট এবং সাদা ক্যাপ পরেন।
আধুনিক ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের সামাজিকমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট, ইউটিউব চ্যানেল থাকে। কিন্তু ‘ভোলে বাবা’ এসব থেকে দূরে থাকেন। কোনো অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট নেই। তার অনুসারীদের দাবি, একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে সাধারণ মানুষকে নিয়ে তিনি কাজ করেন। ফলে এক বিপুল সংখ্যক মানুষের ওপর তার প্রভাব রয়েছে।

মঙ্গলবার হাথরাসের মুঘলাগড়ি গ্রামে তাবু খাঁটিয়ে সৎসঙ্গের আয়োজন করা হয়েছিল। গরমের মধ্যে অস্বস্তি বোধ করেছিলেন ভক্তরা। ‘ভোলে বাবা’র ভাষণ শেষ হতেই হুড়োহুড়ি করে বাইরে বেরোতে গিয়েই বিপত্তি ঘটে। পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান ১২০ অনুসারী। এর আগে কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন বিধিনিষেধ সত্ত্বেও প্রচুর জনসমাগম চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিতর্কে জড়িয়েছিলেন এই ভোলে বাবা।