
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির ঘোষিত ২৩৬টি আসনের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকায় বিভিন্ন স্থানে বিরোধ দেখা দেওয়ায় দলটি মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করছে। গুলশান কার্যালয়ে এসে বা ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে এই বিরোধ নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বিএনপি হাইকমান্ড।
মঙ্গলবার দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কয়েকটি আসনের মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীদের সঙ্গে গুলশানে বৈঠক করেন। একই সঙ্গে তাদের দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়—এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা, ধানের শীষের পক্ষে মাঠে থাকার নির্দেশনা এবং পরিস্থিতি পর্যালোচনার আশ্বাস দেওয়া হয়। মনোনয়নবঞ্চিতরাও নিরপেক্ষভাবে জনপ্রিয়তা যাচাই করে প্রার্থী পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়ে দলের প্রতি আনুগত্য থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বয়স্ক প্রার্থী ইস্যুতে স্থানীয় ক্ষোভ
কয়েকটি আসনে বয়স্ক প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এসব প্রার্থী বয়সের ভারে প্রচারণা চালাতে পারছেন না এবং তরুণ ভোটারের কাছে তারা আগ্রহ হারাচ্ছেন। তরুণ প্রজন্ম—বিশেষ করে জেন-জি—এই নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তারা মনে করছেন। ফলে স্থানীয় নেতারা অপেক্ষাকৃত তরুণ ও সক্রিয় প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়ার দাবি তুলেছেন।
প্রার্থী নিয়ে বিরোধ ও সমাধান প্রচেষ্টা
কুমিল্লা-৯, সাতক্ষীরা-৩, ময়মনসিংহ-৬ সহ বিভিন্ন আসনে প্রার্থী ঘোষণার পর বিক্ষোভ হওয়ায় বিএনপি হাইকমান্ড সংশ্লিষ্টদের ডেকে নির্দেশনা দিয়েছে। কুমিল্লায় সামিরা আজিম দোলা ও আবুল কালামের মধ্যে বিরোধ মেটানো হয়েছে। সাতক্ষীরা ও ময়মনসিংহেও মনোনয়নবঞ্চিতদের সঙ্গে কথা বলেছেন শীর্ষ নেতারা।
নাটোর-১ আসনে ফারজানা শারমিন পুতুলকে প্রার্থী করায় অন্য দুই মনোনয়নপ্রত্যাশীর সমর্থকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের দাবি—এলাকায় পুতুলের জনপ্রিয়তা কম। পুনর্বিবেচনা না হলে জয়ের সম্ভাবনা ক্ষুণ্ন হবে বলেও জানান তারা। তবে তারা দলের নির্দেশনা মেনে চলার অঙ্গীকার করেছেন।
এছাড়া জয়পুরহাট, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ আরও কয়েকটি আসনের মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল। প্রয়োজনে জরিপ করে প্রার্থী পরিবর্তনের বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বয়স্ক প্রার্থী বদলের দাবিতে আবেদন
স্থানীয় নেতারা কয়েকটি আসনে লিখিতভাবে বয়স্ক প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন। যেমন—
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪: ৮৮ বছর বয়সি মুশফিকুর রহমানের পরিবর্তে স্থানীয় জনপ্রিয় নেতা কবীর আহমেদ ভূঁইয়াকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি।
কুষ্টিয়া-৪: মেহেদী আহমেদ রুমীর পরিবর্তে তরুণ নেতা শেখ সাদীকে প্রার্থী করার আবেদন।
চট্টগ্রাম-১৩: ৮০ বছরের বেশি বয়সি সরওয়ার জামাল নিজামের মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি।
মুন্সীগঞ্জ-২: মিজানুর রহমান সিনহার পরিবর্তে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদকে প্রার্থী করার আহ্বান।
নেতারা যুক্তি দিয়েছেন, তরুণ ভোটারই এখন মূল শক্তি, তাই তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আছে এমন প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
সূত্র : বিডি২৪লাইভ













































