প্রচ্ছদ সারাদেশ কারাবন্দী বন্ধুকে স্ত্রীর প্রেমিক হত্যার গল্প শুনিয়ে ফেঁসে গেলেন হাবিব

কারাবন্দী বন্ধুকে স্ত্রীর প্রেমিক হত্যার গল্প শুনিয়ে ফেঁসে গেলেন হাবিব

দেশজুড়ে: নাটোরের গুরুদাসপুরে স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় জেলে যান মো. আল হাবিব সরকার (২৫) নামে এক যুবক। সেখানে গিয়ে এক বন্ধুর কাছে স্ত্রীর প্রেমিককে হত্যার পর মরদেহ গুমের বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। যে কাজে সহযোগিতা করেছিলেন তার শ্বশুরও। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর শনিবার সকালে অভিযান চালিয়ে শ্বশুর আশরাফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

হত্যার এই তথ্য ফাঁস হওয়ার পর গত শুক্রবার (১ মার্চ) নিহতের মা গুরুদাসপুর থানায় বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং দুইজনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

শনিবার (২ মার্চ) সকালে সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার গোলচত্বর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. আশরাফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান র‍্যাব-৫ এর নাটোর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সঞ্জয় কুমার সরকার।

আর স্ত্রী মোছা. তানজিলা বেগমের ২০২২ সালের নভেম্বর দায়ের করা নারী নির্যাতন মামলায় মো. আল হাবিব সরকারের জামিন হলেও স্ত্রীর পরকীয়া মফিজুল ইসলামকে হত্যা মামলায় আবার তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান সঞ্জয় কুমার সরকার।

নিহত মো. মফিজুল ইসলাম গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় খলিফাপাড়া এলাকার মো. আজাত মোল্লা ও মোছা. মাইনুর বেগম দম্পতির ছেলে। গ্রেপ্তার মো. আল হাবিব সরকার সিরাজগঞ্জের তাড়াশের তালোম কাচারিপাড়া এলাকার মো. ওজারত আলীর ছেলে এবং হাবিব সরকারের মামা শ্বশুর মো. আশরাফুল ইসলাম গুরুদাসপুরের খামাড়নাচকৈড় এলাকার মো. আব্দুস সামাদের ছেলে।

মামলার বরাত দিয়ে সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন, ২০২৩ সালে নভেম্বর আসামি আল হাবিব সরকারের সঙ্গে স্ত্রী তানজিলা বেগমের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। তানজিলা স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে মামলা করলে জেলে যান হাবিব। জেল হাজতে হাবিব সরকারের সঙ্গে গুরুদাসপুরের খলিফাপাড়ার মো. মোজাফফর মুন্সীর ছেলে আরেক বন্দি মো. জাকির মুন্সির সঙ্গে পরিচয়ের পর বন্ধুত্ব হয়। এরপর জাকির মুন্সীকে আসামি হাবিব সরকার স্ত্রীর প্রেম ও প্রেমিককে হত্যার পর মরদেহ গুমের কথা বলেন। হাবিবের স্ত্রী তানজিলা ও মফিজুল চাচকৈড় খলিফাপাড়ায় এক বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজের সুবাদে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি জানাজানি হলে হাবিবের শ্বশুর আসামি আবু তাহের খলিফা ওরফে তারা খলিফা (৫৫) তানজিলার প্রেমিক মফিজুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে খুন করার হুমকি দেন।

২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তানজিলাকে চাপ দিয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মফিজুলকে তার ডেকে নিয়ে আসামি মো. আশরাফুল ইসলামসহ অন্যান্য আসামিরা মুখে স্কচটেপ দিয়ে বাড়িতে আটকে রাখে। আসামিরা মফিজুলকে মাটিতে ফেলে দিলে আবু তাহের খলিফা তাকে পা দিয়ে মাটির সঙ্গে চেপে ধরেন। তখন আশরাফুল মফিজুলের বুকের ওপর পা তুলে ধারালো শাবল দিয়ে বুকে আঘাত ককরে। এতে শাবল মফিজুলের বুকের ভেতর ঢুকে যায় এবং ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। এরপর আসামিরা মফিজুলের মরদেহ একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে বাড়ির পাশের মাদ্রাসার সেফটিক ট্যাংকের পাশে মাটিতে পুঁতে রাখে।

এদিকে জাকির মুন্সী গত সপ্তাহে জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে বিষয়টি মফিজুল ইসলামের মাসহ এলাকার অন্যান্য লোকজনের কাছে বলে দেন। এ ঘটনায় মফিজুল ইসলামের মা বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় হত্যা মামলা করেন বলে জানান সঞ্জয় কুমার সরকার।

এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জল হোসেন বলেন, আগামীকাল বিধি অনুযায়ী হত্যার পর গুম করা মফিজুল ইসলামের মরদেহ গুরুদাসপুরের পুরানপাড়া মাদ্রাসার পানির সেফটিক ট্যাংকের পাশ থেকে উদ্ধার করা হবে।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।