
ইসরায়েলের আকস্মিক হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা হামলা শুরু করে তেহরানও। মূলত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করে ইসরায়েলি হামলার জবাব দিচ্ছে দেশটি। সাড়ে চারশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে তারা। প্রথমদিকে বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলা করা সম্ভব হলেও পরের দিকে ক্রমে ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে। প্রশ্ন হলো—এ মুহূর্তে ইরানের কাছে কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র আছে এবং বর্তমানে দেশটি যে হারে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে, তাতে তাদের মজুত শেষ হতে কত দিন লাগবে?
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার মতে, ইরান মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় ও বৈচিত্র্যময় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ভান্ডার গড়ে তুলেছে। মার্কিন সূত্র অনুযায়ী, ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাত শুরুর আগে ইরানের কাছে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩ হাজারটি। এর মধ্যে রয়েছে স্বল্প, মধ্য ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং এমনকি হাইপারসনিক প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে।
ইরানের আধাসরকারি সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ গত বছর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, তাদের কাছে ইসরায়েল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে এমন অন্তত ৯ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মিডিয়াম রেঞ্জ ব্যালিস্টিক মিসাইল, যেমন—ইমাদ ও গদর-১। এই রেঞ্জের মধ্যে ইরানের প্রথম হাইপারসনিক ফাত্তাহ-১ ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে।
ইসরায়েলি সূত্র অনুসারে, সংঘাত শুরু হওয়ার আগে ইরানের গুদামে আনুমানিক ৩০০০ ক্ষেপণাস্ত্র থাকলেও সংঘাত চলাকালে তারা এক-তৃতীয়াংশ ক্ষেপণাস্ত্র বা উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ধ্বংস করেছে। সেই হিসাবে ইরানের কাছে বর্তমানে ব্যবহার উপযোগী অবশিষ্ট ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে প্রায় ২ হাজারটি।
পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমেগুলোর তথ্যমতে, ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতে ইরান গড়ে প্রতিবার ৫০ থেকে ১৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র একসঙ্গে ছুড়ছে। এই হার যদি তারা ধরে রাখে বা দিনে প্রতিদিন গড়ে ১০০টি করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, তবে মাত্র ২০ দিনে ইরানের মজুত শেষ হয়ে যাবে। আর যদি সপ্তাহে ১০০টি করে নিক্ষেপ করে, তবে অবশ্য মজুত শেষ হতে ২০ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। তবে এই হিসাব চূড়ান্ত নয়। কারণ, ইরান নিজেই ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন করে। কিছু বিশ্লেষণ বলছে, ইরান বছরে ৫০০ থেকে ১ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনে সক্ষম। কিন্তু এটি পর্যাপ্ত নয়, যদি সংঘাত টানা চলে।