হেড লাইন: নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পক্ষে প্রচারণাকালে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২৪ জন আহত হয়েছেন। এসময় ভাঙচুর করা হয়েছে প্রচারণায় ব্যবহৃত তিনটি মাইক্রোবাস, সংযোগ কেটে দেওয়া হয় প্রচার মাইকেরও। বুধবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দুপক্ষের দফায় দফায় এই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. জাফর উল্যা, কবিরহাট উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু জাফর আবির, কবিরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আলাবক্স তাহের টিটু, সদর উপজেলার ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফয়েজ উল্যাহ, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসেন, পৌরসভা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, বাটইয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক এনায়েত হোসেন সোহাগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা ইসমাইল হোসেন, সোলায়মান, ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদ্দাম হোসেন, কাউন্সিলর জাসেদ, যুবলীগ নেতা তুহিন, কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ ২৪ জন। আহতদের মধ্যে আট জনকে কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাবেক মেয়র টিটু ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবিরের নেতৃত্বে তিনটি মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভূঁইয়ারহাট বাজারে আসেন। তারা নোয়াখালী-৫ আসনের নৌকার প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পক্ষে লিফলেট বিতরণ করেন। লিফলেট বিতরণ শেষে ভূঁইয়ারহাট যাত্রী ছাউনির সামনে পথসভা করে নৌকার পক্ষে ভোট চান। এ সময় বাটইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন শাহীনের নেতৃত্বে নৌকার আরেকটি গ্রুপ সেখানে প্রচারণায় আসেন। তারা এসে ওই গ্রুপকে প্রচারণায় বাধা দেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং পরে সংঘর্ষে জড়ান। সংঘর্ষের সময় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আহত হন অনেকে। কবিরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আলাবক্স তাহের টিটু অভিযোগ করে বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর বিভিন্ন সময় আমরা কাদের ভাইয়ের পক্ষে প্রচারণায় গেলে বাটইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন আমাদের নেতাকর্মীদের মারধর করে বাধা দেন। কবিরহাটে ওবায়দুল কাদেরের পথসভার দিনও শাহীনের নেতৃত্ব আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘আজ আমরা নৌকার পক্ষে কাছারিহাট, ওটারহাটে প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ করি। সন্ধ্যায় ভূঁইয়ারহাট বাজারে লিফলেট বিতরণ করার পর আমাদের নেতাকর্মীরা নৌকায় ভোট চেয়ে বক্তব্য দিচ্ছিল। এ সময় শাহীনের পক্ষে স্লোগান দিয়ে শাহীনের নেতৃত্বে তার অস্ত্রধারী লোকজন এসে আমাদের মাইকের তার কেটে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এর প্রতিবাদ জানালে আমাদের নেতাকর্মীদের এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে এবং আমাদের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। এতে আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বাটইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন শাহীন বলেন, ‘ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোনও সমন্বয় না করেই তারা প্রচারণায় আসেন। এসে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। আমরা ওবায়দুল কাদেরের প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ করতে করতে পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের নেতাকর্মীরা আমাদের লোকজনের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে এবং কয়েকজনকে মারধর করে। এতে আমার চার নেতাকর্মীসহ আমি আহত হয়েছি।’ কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। নির্বাচনি প্রচারণার সময় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। এ সময় সংঘর্ষকারীরা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছেন। তবে এখনও কেউ আমাদের লিখিত কোনও অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |