প্রচ্ছদ সারাদেশ এমপি আনার খুন : সেই শিলাস্তিকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন দাদা

এমপি আনার খুন : সেই শিলাস্তিকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন দাদা

সারাদেশ: কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন শিলাস্তি রহমান। পৈত্রিক সূত্রে তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর সদর ইউনিয়নের পাইশানা গ্রামে। শিলাস্তির এমন ঘটনায় হতবাক স্বজনরা। শনিবার (২৫ মে) শিলাস্তির গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পাইশানা গ্রামের একটি অংশে অগোছালো কিছু বাড়ি-ঘর রয়েছে। যার একটি বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে খুব সহজেই যাতায়াত করা যায়। প্রত্যেকটি বাড়ির ভেতর ও বাইরে দিয়ে ছোট ছোট পথ রয়েছে। প্রায় ৪০টি পরিবারের বসবাস ওই গ্রামে। যা মিয়া বাড়ি নামে পরিচিত। এরমধ্যে একটি বাড়ি আরিফুর রহমান আরিফ অর্থাৎ শিলাস্তির বাবার বাড়ি। বাড়ির ভেতর প্রবেশ করতেই দেখা মিলে শিলাস্তির চাচাতো দাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম মিয়ার সঙ্গে। তার সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি হাত তুলে দেখিয়ে দেন শিলাস্তিদের ঘর। সেলিম মিয়ার ঘরের সামনেই শিলাস্তিদের বাড়ি। টিনের ঘর, ঘরের প্রধান ফটকে ঝুলছে তালা। টিনের ঘরের পেছনে রয়েছে দোতলা বাড়ি। তবে বাড়ির ভেতরে নেই কোনো আসবাবপত্র।

এ সময় দাদা সেলিম মিয়া জানান, দুই বোনের মধ্যে শিলাস্তি বড়। তার বাবা আরিফুর রহমান গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। ১৯৭১ সালের পর সপরিবারে ঢাকায় থাকেন তারা। পরবর্তীতে রাজধানী ঢাকার উত্তরাতে যখন বসবাস শুরু করেন তখন জন্ম হয় শিলাস্তির। ছোট বেলায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে দু-একবার এসেছেন শিলাস্তি। এ ছাড়া গত দুই বছর আগে শিলাস্তি গ্রামের বাড়ি আসে কিন্তু সবার সঙ্গে দেখা করেই চলে যায়। এরপর তাকে আর কেউ দেখেনি। সেলিম মিয়া আরও বলেন, শিলাস্তির চলাফেরা উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির হওয়ায় এবং বড় ভাইয়ের ছেলে আরিফের পারিবারিক সম্পর্ক ভালো না থাকায় আমাদের পরিবারের সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই। এ সময় সেলিম মিয়া তার নাতনি শিলাস্তির এমন ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, প্রথম যখন শুনতে পাই এক এমপিকে হত্যার সন্দেহে শিলাস্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তখন অনেক কষ্ট পেয়েছি। আমাদের মিয়া বাড়ির মানসম্মান সে নষ্ট করে দিয়েছে। সে যদি এই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে অবশ্যই তার বিচার হবে। তাকে শাস্তি পেতে হবে। তবে আমার মনে হয় শিলাস্তি এ হত্যার সঙ্গে জড়িত না। তাকে ব্যবহার করতে পারে অন্যভাবে। সে হত্যা করে নাই বলে আমার মনে হয়। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে তারা তদন্ত করছে। তাদের তদন্তে অবশ্যই বেরিয়ে আসবে কি কারণে হত্যা করা হয়েছে। কে বা কারা হত্যা করেছে।

তিনি আরও বলেন, যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে। এখন সে (শিলাস্তি) যদি এরসঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে তার বিচার হবে। আর আমাদের যা মানসম্মান ছিল তা শেষ হয়ে গেছে। এ উপজেলার মানুষ আমাদের এক নামে চিনে। আমাদের সম্মান দিয়ে কথা বলে। আমাদের সঙ্গে কারো কোনো শত্রুতা নেই। সবার সঙ্গে আমার ভালো ব্যবহার করি। কিন্তু আজ যে ঘটনা ঘটেছে এতে কি বলবো, বলার কোনো কিছু নেই। উল্ল্যখ্য, গত ১৩ মে কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজীমকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় শিলাস্তি রহমানসহ ৩ আসামি ৮ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। অন্য ২ আসামি হলেন- আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ও তানভীর ভূঁইয়া। গত ২২ মে ঢাকার শেরে বাংলানগর থানায় খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে মামলা করেন নিহত আনোয়ারুল আজীমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। আদালতে শিলাস্তি বলেন, তিনি শুধু হত্যা সংঘটিত হওয়া কলকাতার ওই বাসায় ছিলেন। তা ছাড়া কিছু জানেন না। ডিবি পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘শিলাস্তি রহমান এমপি আনোয়ারুল আজীম খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনের বান্ধবী। গত ১৩ মে তিনি আমানুল্লাহ ও আনোয়ারুল আজীমের সঙ্গে ফ্ল্যাটে ঢোকেন। হত্যার সব পরিকল্পনা করে শাহীন ১০ মে দেশে ফিরে এলেও শিলাস্তি থেকে যান কলকাতা। তিনি ১৫ মে বিমানে দেশে ফেরেন।’