প্রচ্ছদ আর্ন্তজাতিক এবার ইরানের ওপর শক্তিশালী আঘাত করল যুক্তরাষ্ট্র!

এবার ইরানের ওপর শক্তিশালী আঘাত করল যুক্তরাষ্ট্র!

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তপ্ত ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাত শেষে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে আপাত যুদ্ধবিরতি চলছে। তবে সংঘাত থেমে গেলেও কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ থামেনি। এবার ইরানের তেলভিত্তিক অর্থনীতির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের অধীন অর্থমন্ত্রণালয় গতকাল (৩ জুলাই) একটি নতুন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়, যার লক্ষ্য ইরানি তেল বিক্রির সঙ্গে জড়িত আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানান, “তেহরানের রাজস্বের উৎসে চাপ বাড়িয়ে তাদের অস্থিতিশীল কার্যক্রমে অর্থায়ন বন্ধ করাই আমাদের উদ্দেশ্য।”

যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, ইরাক ও ব্রিটেনের দ্বৈত নাগরিক সালিম আহমেদ সাইদের নেতৃত্বে একটি চক্র বহু বছর ধরে কোটি কোটি ডলারের ইরানি তেল আন্তর্জাতিক বাজারে পাচার করে আসছে। তারা ভুয়া নথির মাধ্যমে ইরানি তেলকে ‘ইরাকি তেল’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে তা সংযুক্ত আরব আমিরাত বা অন্য পশ্চিমা বাজারে বিক্রি করত।

মার্কিন প্রশাসনের মতে, এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২০ সাল থেকে এই কার্যক্রম চালু আছে, যার মাধ্যমে ইরান অনেকটা গোপনে রাজস্ব আয় করছে এবং বিভিন্ন অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারে সেই অর্থ ব্যয় করছে।

নতুন নিষেধাজ্ঞায় কয়েকটি জাহাজও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যেগুলো ‘শ্যাডো ফ্লিট’ নামক গোপন ইরানি তেল পরিবহন ব্যবস্থার অংশ বলে দাবি করছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব জাহাজ গোপনে তেল বহন করে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটিয়ে বাজারে পৌঁছায়।

এছাড়া, হিজবুল্লাহ-নিয়ন্ত্রিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘আল-কারদ আল-হাসান’ এবং এর কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ওয়াশিংটন। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা কোটি কোটি ডলারের লেনদেনে হিজবুল্লাহকে সহযোগিতা করেছে।

এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ জব্দ করা যাবে। একই সঙ্গে, কোনও মার্কিন নাগরিক বা প্রতিষ্ঠান তাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবে না।

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে তেহরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর আর্থিক সহায়তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বিগ্ন। এরই অংশ হিসেবে দেশটির বিরুদ্ধে একাধিকবার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

রয়টার্সের এক আগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু গোপন তেল বিক্রির মাধ্যমে ইরান প্রতিবছর অন্তত ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে থাকে। যার একটি বড় অংশই যায় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর পেছনে।