
রাজধানীর জিগাতলার একটি মেস থেকে উদ্ধার হওয়া এনসিপি নেত্রী জান্নাতারা রুমী (৩০)-এর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরেই তার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে হাজারীবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমা বেগম মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন।
জানা যায়, রুমী এনসিপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ধানমন্ডি থানার যুগ্ম সমন্বয়কারীর দায়িত্বে ছিলেন। চলতি বছরের ৬ নভেম্বর ঘোষিত সমন্বয় কমিটিতে তিনি এ পদে অন্তর্ভুক্ত হন। রুমী নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার নাজিরপুর থানার বাসিন্দা মো. জাকির হোসেনের কন্যা। তার মায়ের নাম নুরজাহান।
হাজারীবাগ থানার উপ-পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান জানান, জান্নাতারা রুমীর বাড়ি নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। তার বাবা মো. জাকির হোসেন। রুমী ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে নার্সিং বিষয়ে পড়ালেখা শেষ করেন। এরপর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। তবে বর্তমানে তিনি কোথায় চাকরি করতেন বা কর্মহীন ছিলেন—সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
পরিবারের সদস্যরা জানান, জিগাতলার ওই বাসায় একটি মেসে থাকতেন রুমী। তার দুটি বিয়ে হয়েছিল এবং উভয় সংসারই ভেঙে গেছে। দুটি সংসারে তার দুটি সন্তান রয়েছে, যারা বর্তমানে তাদের বাবার কাছে থাকে।
মৃত রুমীর চাচাতো ভাই মেহেদী হাসান বলেন, বুধবার রাতে রুমী একাই নিজ কক্ষে ছিলেন। তার রুমমেট বাড়িতে গিয়েছিলেন, যদিও একই ফ্ল্যাটের অন্য কক্ষে আরও কয়েকজন থাকতেন। রাতে কাজের বুয়া পাঁচতলায় গিয়ে ফ্ল্যাটের দরজা খোলা ও ভিতরে বাতি জ্বলতে দেখে সন্দেহ হলে ভেতরে উঁকি দেন। এ সময় তিনি রুমীকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে বিষয়টি সবাইকে জানানো হয়।
স্বজনদের ধারণা, পারিবারিক ও সাংসারিক হতাশা থেকেই এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে তারা বিষয়টি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে তদন্তের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে রুমীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া একটি পোস্ট ঘিরে নানা আলোচনা তৈরি হয়েছে। পোস্টে তিনি লেখেন, “একদিন ভোর হবে সবাই ডাকাডাকি করবে কিন্তু আমি উঠব না… কারণ আমি ভোরে উঠি না!” একটি দলবদ্ধ ছবির সঙ্গে দেওয়া এই লেখার অর্থ নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ এটিকে সাধারণ বা মজার ছলে লেখা মনে করছেন, আবার কেউ কেউ বলছেন—মৃত্যুর আগে মানুষের কথাবার্তায় কখনো কখনো অস্বাভাবিক ইঙ্গিত ফুটে ওঠে।
পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।
সূত্র : বিডি২৪লাইভ












































