আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ও সরবরাহ সংকটের অজুহাত দেখিয়ে খোলা ভোজ্যতেলের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। গত এক মাসে সয়াবিন তেলের লিটারপ্রতি দাম বেড়েছে ১০ টাকা আর পাম তেলের দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ১৫ টাকা। তবে বোতলজাত ভোজ্যতেলের দাম বাড়েনি।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার তদারকির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল শনিবার প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১৫১ থেকে ১৫৫ টাকায়, যা এক মাস আগে ছিল ১৪৫ থেকে ১৫২ টাকা। গতকাল খোলা পাম তেল বিক্রি হয়েছে ১৩৭ টাকা থেকে ১৪২ টাকা। এক মাস আগে দাম ছিল ১৩০ টাকা থেকে ১৩৫ টাকা।
ঢাকার মৌলভীবাজারের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী মেসার্স জব্বার স্টোরের মালিক আব্দুল জব্বার বলেন, এক মাসের ব্যবধানে লিটারপ্রতি পাম তেলের দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ১৫ টাকা। আর সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণ হিসেবে কোম্পানিগুলো দেশে বাড়িয়েছে।
এ বাজারের আরেক ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী মোজাহিদুল ইসলাম হিরা বলেন, এক মাস আগে ২০৪ লিটারের এক ব্যারেল খোলা সয়াবিন তেলের দাম ছিল ২৯ হাজার টাকা। সেই হিসাবে প্রতি লিটারের দাম পড়ত ১৪২ টাকা ১৬ পয়সা। বর্তমানে তা বেড়ে ৩১ হাজার টাকা হয়েছে। লিটারপ্রতি দাম পড়ছে ১৫১ টাকা ৯৬ পয়সা। এক মাস আগে পাম তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ছিল ২৫ হাজার টাকা। এ হিসাবে লিটারপ্রতি দাম পড়ত ১২২ টাকা ৫৫ পয়সা। বর্তমানে প্রতি ব্যারেল বিক্রি হচ্ছে ২৯ হাজার ৭৫০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি ব্যারেলে দাম বেড়েছে ৪ হাজার ৭৫০ টাকা, লিটারে বেড়েছে ২৩ টাকা ২৮ পয়সা।
দেশের বাজারে হাতে গোনা কয়েকটি কোম্পানি ভোজ্যতেল সরবরাহ করে। এর মধ্যে সিটি, মেঘনা, এস আলম, টিকে, শবনম, বসুন্ধরা ও বাটারফ্লাই গ্রুপ অন্যতম। এর মধ্যে এস আলম গ্রুপ পণ্য সরবরাহ না করেই অপেক্ষাকৃত কম দামে এসও (সরবরাহ আদেশ) বিক্রি করত। বর্তমানে এস আলম গ্রুপের আমদানির পরিমাণ কমে গেছে।
বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) রেদোয়ানুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ২০ বছরের ইতিহাসে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলকে টপকে পাম তেলের দাম বেড়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ ডলারে এবং পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১২৫ ডলারে।
দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার বিষয়ে রেদোয়ানুর রহমান বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বাজারে পণ্যের সরবরাহ বেশি থাকলে দাম বাড়ার কোনো সুযোগ নেই। সরবরাহ সংকট হলে দাম বেড়ে যায়।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্রেড বিস্কুট অ্যান্ড কনফেকশনারি প্রস্তুতকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক রেজু বলেন, পাম তেলের দাম বাড়ায় তাদের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তবে এই মুহূর্তে তারা পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন না। আরও কিছুদিন অপেক্ষা করবেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশে বছরে মোট ভোজ্যতেলের চাহিদা ২২ লাখ টন। দেশে উৎপাদন হয় ২ লাখ ৫০ হাজার টন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অপরিশোধিত ভোজ্য তেল আমদানি হয়েছে ২৩ লাখ টন।
সুূত্রঃ ইত্তেফাক
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |