অপরাধ: ইসলামী ব্যাংক দখলের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শীর্ষ ২ কর্মকর্তা মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ ও সামরিক সচিব মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন। তাদের নির্দেশে এস আলমকে সহযোগিতা করেন ডিজিএফআইর তৎকালীন শীর্ষ ২ কর্মকর্তা। এ কথা জানান, ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সে সময়ে নিয়োগ পাওয়া দুই পরিচালক।
চট্টগ্রামের বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলম ইসলামী ব্যাংক দখল করেন ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি। তবে, এ প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৬ সাল থেকে। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ব্যাংক দখলের যাবতীয় নির্দেশনা আসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। বাস্তবায়ন করে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই)।
২০১৬ সালের মে মাসে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম। তিনি জানান, নিয়োগের জন্য ডিজিএফআই’র এক কর্মকর্তা তাঁর জীবনবৃত্তান্ত নেন। এরপর তাঁকে ডাকা হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। সেখানে তাঁকে তাঁর করণীয় জানান তৎকালীন মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ।
ইসলামী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম বলেন, ‘আমাকে বলল যে- ভাই আমি তো ডিজিএফআই ছেড়ে চলে আসছি। কিন্তু সব ঝামেলাগুলো আমার মাথায়। এখন ওপর থেকে আমাকে বলা হয়েছে, আপনাকে পদত্যাগ করানোর জন্য।’
অধ্যাপক আহসানুলের কিছুদিন পর ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে নিয়োগ পান সাবেক সেনা কর্মকর্তা আব্দুল মতিন। তাঁর নিয়োগ এস আলমের প্যারাডাইজ ইন্টারন্যাশনল কোম্পানির পরিচালক হিসেবে। তাঁর নিয়োগ তদারকি করেন শেখ হাসিনার তৎকালীন সামরিক সচিব প্রয়াত মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন। আবদুল মতিন জানান, ব্যাংকের বিভিন্ন বিষয়ে মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক হয় তাঁর।
ইসলামী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুল মতিন বলেন, ‘পরবর্তীতে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেইখানে ডিজিএফআই’র সম্পৃক্ততা আসে। এর আগে পিএম’র অফিস থেকে জয়নাল আবেদিন সে সম্ভবত এস আলমের আত্মীয়, তারা একই এলাকার, তাঁর (জয়নাল) মাধ্যমে মূলত আমাকে অ্যাপ্রোচ করে।’
ধীরে ধীরে ইসলামী ব্যাংকের বোর্ডে সরকার ও এস আলমের লোক আরও বাড়ে। এরপর আসে ৪ জানুয়ারি। যে রাতে ব্যাংকটির এমডিসহ বোর্ডের একাধিক সদস্যকে পদত্যাগে বাধ্য করেন ডিজিএফআই কর্মকর্তা। পরদিন হোটেল রেডিসনে বসে বোর্ড সভা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডিজিএফআই’র বিভিন্ন পর্যায়ের ৮ থেকে ১০ জন।
ব্যাংকটির সাবেক সাবেক এমডি আব্দুল মান্নান বলেন, ‘যে কাগজে সই করে আমি পদত্যাগ করেছি, এটা ইসলামী ব্যাংকের প্যাড হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এটা একটি ফেক কাগজ ছিল।’
হুকুম পালন করা ডিজিএফআই কর্মকর্তাদের পরিচয় নিশ্চিত হতে ইসলামী ব্যাংকের তৎকালীন ৩ পরিচালকের সঙ্গে কথা হয় ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের। তাঁরা জানান, ব্যাংক দখলে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন ডিজিএফআই’র তখনকার মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আকবর হোসেন ও পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম আমিনুল হক।
সূত্র : intvbd
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |