‘আমার একটাই দোষ, আমি গরিব। আমি কাউকে কোনো দোষ দিচ্ছি না, নিজের ইচ্ছায় জীবন ত্যাগ করলাম- চিরকুটে এমন লিখে আত্মহত্যা করেছেন মো. কাওসার হোসেন (১৮) নামের এক তরুণ।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাত ১০টার দিকে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মদনপুরা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে নিজ গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়। কাওসার ওই এলাকার শাহ আলম মৃধার ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বাবার মৃত্যুর পর থেকেই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন কাওসার। ২০২৪ সালে বাউফল সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে জীবিকার সন্ধানে পরিবারসহ রাজধানী ঢাকায় চলে যান তিনি। এক পর্যায়ে বিয়েও করেন। তবে নানা চেষ্টার পরও কোনো স্থায়ী চাকরি না পাওয়ায় তিনি ধীরে ধীরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। শেষ পর্যন্ত হতাশা আর চরম দারিদ্র্যতায় অত্মহত্যা করেন কাওসার।
নিহতের বন্ধুরা জানান, বুধবার (১৪ মে) রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পাশে পাওয়া যায় একটি চিরকুট, যেখানে লেখা ছিলো– ‘আমার একটাই দোষ আমি গরিব। আমি কাউকে কোনো দোষ দিচ্ছি না, নিজের ইচ্ছায় জীবন ত্যাগ করলাম। আমার জীবনে তিনজন মানুষ ছিল- মা, বউ ও ভাই। আল্লাহ তুমি ওদের দেখে রেখো।’
ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পড়ে ছিল। পরিবারের আর্থিক দুরবস্থার কারণে কাওসারের মা ছেলের মরদেহ গ্রামে আনতে অক্ষম হন। পরে বিষয়টি জানতে পেরে বাউফল উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ মরদেহ পরিবহনের ব্যবস্থা করেন এবং দাফন কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করেন।
