
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ‘যুগপৎ’ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সঙ্গে আসন সমঝোতায় যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এ ধারাবাহিকতায় সাতটি শরিক দলের জন্য মোট ১০টি আসন ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই তথ্য জানান।
মির্জা ফখরুল জানান, সমঝোতার আওতায় যেসব আসনে শরিক দলগুলো প্রার্থী দেবে, সেসব আসনে বিএনপি নিজে কোনো প্রার্থী দেবে না। একই সঙ্গে শরিক দলগুলো কেবল নির্ধারিত আসনগুলোতেই প্রার্থী দেবে—এটাই সমঝোতার শর্ত। তবে যারা বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করতে আগ্রহী, তাদের বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি।
যেসব আসনে সমঝোতা হয়েছে
বিএনপির সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে যে আসনগুলোতে শরিক দলগুলোর প্রার্থী থাকছেন, সেগুলো হলো—
বগুড়া-২: নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না
পিরোজপুর-১: জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার
নড়াইল-২: এনপিপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ
যশোর-৫: ইসলামী ঐক্য জোটের মুফতি রশিদ বিন ওয়াক্কাস
পটুয়াখালী-৩: গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর
ঝিনাইদহ-৪: গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান
ঢাকা-১২: বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি
ঢাকা-১৩: ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ
এদের মধ্যে ববি হাজ্জাজ বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।
শরিকদের বাইরে যারা বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন
এরই মধ্যে বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম নিজের দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। পরে তাকে লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদাও দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে নির্বাচন করতে আগ্রহী। এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও তার প্রার্থিতার বিষয়ে বিএনপি ইতিবাচক বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
জমিয়তকে চারটি আসন
এর আগে বিএনপি জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশকে চারটি আসন ছেড়ে দেয়। সেগুলো হলো—
সিলেট-৫: দলের আমির উবায়দুল্লাহ ফারুক
নীলফামারী-১: মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২: জুনায়েদ আল হাবিব
নারায়ণগঞ্জ-৪: মনির হোসেন কাসেমী
এছাড়া এলডিপির মহাসচিব, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. রেদোয়ান আহমেদ কুমিল্লা-৭ আসনে নির্বাচন করবেন।
বিএনপির হিসাব–নিকাশ
বিএনপি ইতোমধ্যে দুই দফায় ২৭২টি আসনে দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। বাকি ২৮টি আসনে শরিকদের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
২০১৪ ও ২০২৪ সালে নির্বাচন বর্জন এবং ২০১৮ সালে সীমিত অংশগ্রহণের পর এবার নির্বাচনে ফিরছে বিএনপি। দলীয় সূত্র বলছে, দীর্ঘ ১৫ বছরে নির্যাতন- নিপীড়নের শিকার নেতাদের মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগ্রহ বেড়েছে। পাশাপাশি মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যাও বেশি। এ কারণে শরিকদের আসন ছাড় দেওয়ার প্রশ্নে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বকে অত্যন্ত সতর্কভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।













































