ভারত–মালদ্বীপ সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই এবার ভারতকে এক হাত নিলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু। চীনে পাঁচদিনের সফর শেষে শনিবার তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা ছোট হতে পারি, এ কারণে আমাদের ধমক দিয়ে কথা বলার লাইসেন্স আপনাদের নেই।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, শনিবারের এই মন্তব্যের মাধ্যমে ভারতকেই বিশেষ বার্তা দিল মালদ্বীপ। দুই দেশের মধ্যে দা–কুমড়ো সম্পর্ক চলছে। এর মধ্যেই মালদ্বীপে যাওয়া বয়কট করেছেন অনেক ভারতীয় পর্যটক। এর জেরে মুইজ্জু চীনকে অনুরোধ করেছেন, তারা যেন মালদ্বীপে পর্যটক পাঠায়।
এর আগে বেইজিং জানায়, তারা মালদ্বীপে বাইরের কারও হস্তক্ষেপ সমর্থন করবে না। এই দ্বীপদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে তারা বিশ্বাস করে।
মালদ্বীপ ও চীনের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিজেদের স্বার্থে দুই দেশ এক হয়ে কাজ করতে আগ্রহী। চীন সবসময় মালদ্বীপকে সমর্থন দেবে। এমনকি দেশটির উন্নয়ন নিয়েও চীন পাশে আছে।’
ঘটনার সূত্রপাত গত সপ্তাহে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে কটাক্ষ করে পোস্ট দেওয়ায় বরখাস্ত হতে হয় মালদ্বীপের তিন মন্ত্রীকে। বরখাস্ত হওয়া মালদ্বীপের তিন মন্ত্রী হলেন মারিয়াম শিউনা, মালশা ও হাসান জিহান।
সম্প্রতি মোদি ৩৬টি দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত দেশের সবচেয়ে ছোট স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল লাক্ষাদ্বীপ সফর করেন। ৩২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ওই অঞ্চলের পর্যটনশিল্প নিয়ে প্রচার চালানোই ছিল তাঁর সফরের উদ্দেশ্য। এই মন্ত্রীরা মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফরের কিছু ছবি-ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে শেয়ার করে তাঁকে কটাক্ষ করেন।
এমন পরিস্থিতিতে মালদ্বীপ সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সরকারি পদে থাকা অবস্থায় যাঁরা এ ধরনের পোস্ট করেছেন, তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।’
হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, এই ঘটনার পরই ভারতীয় অনেকে মালদ্বীপকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেন। এদের বেশির ভাগই পর্যটক। এমন এক সময়ে এই ঘটনা ঘটে, যখন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু চীন সফরে ছিলেন। এর মধ্যেই তিনি চীনকে আহ্বান জানিয়েছেন আরও বেশি পর্যটক পাঠাতে।
তিন মন্ত্রীতে বরখাস্ত করা ইস্যুতে চীনা সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস বলছে, এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তার করার মানসিকতা রয়েছে ভারতের। মালদ্বীপেও এটি করতে চাইছে তারা। এতে চীনকে যাতে যুক্ত বা দায়ী না করা হয়, সে জন্য বেইজিং দিল্লীকে সতর্ক করেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এমনকি প্রতিবেশীদের ক্ষেত্রে নিজেদের নীতি বদলানোর পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সাউথ–এশিয়ান স্টাডিসের ডেপুটি ডিরেক্টর লিন মিনওয়াং বলছেন, পররাষ্ট্রনীতিতে এরই মধ্যে বদল এনেছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। ভারতের চেয়ে চীনকেই বেশি গুরুত্ব দিতে শুরু করেছেন তিনি। তবে অনেকেই বলছেন, তিনি ইচ্ছে করে এমন করছেন না। তিনি আগে দেশের ভালো চান, পরে পররাষ্ট্রনীতি।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |