প্রচ্ছদ জাতীয় আবাসিক হোটেলে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার পর পালাতে গিয়ে সেনা সদস্য আটক

আবাসিক হোটেলে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার পর পালাতে গিয়ে সেনা সদস্য আটক

বগুড়ায় একটি আবাসিক হোটেলে স্ত্রী আশামণি (২২) ও ১১ মাস বয়সী সন্তান আব্দুল্লাহেল রাফীকে গলা কেটে হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দি করে কক্ষে রেখে পালানোর সময় আটক করা হয়েছে আজিজুল হক (২৪) নামের এক সেনা সদস্যকে।

আজ রবিবার (২ জুন) সকাল ১১টার দিকে বগুড়া শহরের বনানী এলাকায় শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেল থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। আটক সেনা সদস্য আজিজুল হক বগুড়ার ধুনট উপজেলার হেউটনগর গ্রামের হামিদুল হকের ছেলে। তিনি সেনা সদস্য হিসেবে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে কর্মরত আছেন।

তার স্ত্রী আশামণি (২১) বগুড়া শহরের নারুলী তালপট্টি এলাকার আসাদুল ইসলামের মেয়ে।
শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার রবিউল ইসলাম জানান, শনিবার (১ জুন) রাত ৯টার দিকে আজিজুল নিজেকে মিরাজ এবং তার স্ত্রীকে তমা এবং তাদের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে পরিচয় দিয়ে হোটেলের ৩০১ নম্বর কক্ষ ভাড়া করেন। আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি রুম ছেড়ে দেবেন বলে ভাড়া পরিশোধ করতে চান। এ সময় তিনি তার স্ত্রী-সন্তান কোথায় জানতে চাইলে তিনি জানান, তারা সকালে চলে গেছে।

পরে ম্যানেজার রুম দেখে বুঝে নেওয়ার কথা বললে আজিজুল হক স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তাকে আটক করে থানায় খবর দেন তিনি।
এদিকে আশামণির বাবা আসাদুল জানান, তিন বছর আগে আজিজুল হকের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ে হয়। মেয়ে সন্তান প্রসবের আগে থেকেই বাবার বাড়িতে বসবাস করছিল।

জামাই দুই মাসের ছুটিতে বাড়ি আসে। আজ রবিবার তার কর্মস্থলে চলে যাওয়ার কথা ছিল। গত বৃহস্পতিবার জামাই আজিজুল নারুলীতে শ্বশুরবাড়ি যায়। সেখানে দুই দিন থাকার পর শনিবার বিকেলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শহরে মার্কেট করার জন্য বের হয়। রাত ১০টার দিকে আজিজুল ফোন করে তার শ্বশুরকে জানান, রাত ৮টার দিকে তিনি স্ত্রী-সন্তানকে নারুলী যাওয়ার জন্য রিকশায় তুলে দিয়েছেন।

কিন্তু কিছুক্ষণ পর থেকে স্ত্রীর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রবিবার সকালে আসাদুল তার মেয়ের সন্ধান চেয়ে শহরে মাইকিং করার ব্যবস্থা করেন এবং সদর থানায় জিডি করতে যান। থানায় গিয়ে জানতে পারেন, বনানীর এক হোটেলে মা ও সন্তানের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সরাফত ইসলাম বলেন, ‘রাতে যেকোনো সময় আজিজুল তার স্ত্রী ও সন্তানকে গলা কেটে হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দি করে কক্ষের বাথরুমে রাখে এবং ছেলের মাথা বিচ্ছিন্ন করে সকালে করতোয়া নদীতে ফেলে দেয়। পুলিশের একটি দল মাথা উদ্ধারের জন্য আজিজুলকে সঙ্গে নিয়ে নদীতে তল্লাশি শুরু করেছে। কক্ষ থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি রামদা এবং একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।’

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, আজিজুল হক পূর্বপরিকল্পিতভাবে তার স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল হক বলেছে, দাম্পত্য কলহের কারণে সে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করেছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’