প্রচ্ছদ জাতীয় আদর্শ হারিয়ে বিতর্কিত দ্বন্দ্বে জড়ায়, তাহলে তার ফল ভয়াবহ হতে পারে, এমনকি...

আদর্শ হারিয়ে বিতর্কিত দ্বন্দ্বে জড়ায়, তাহলে তার ফল ভয়াবহ হতে পারে, এমনকি জিয়া পরিবারও রেহাই পাবে না

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{"transform":1},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":true,"containsFTESticker":false}

বি এন পি ওয়াকারের সাথে মিলতে পারে , চুপ্পুর সাথে মিলতে পারে , ফজলুল হক ডি বি হারুনের সাথে কোলাকুলি করতে পারে , রুমিন খালাম্মা শামীম উসমানকে প্রকাশ্যে ভাই বলে ডাকতে পারে , তবে শিবিরের সাথে মিলা যাবে না ….

এই মুহূর্তে বিএনপি যে অবস্থানে দাঁড়িয়ে, সেখানে অনেকের মনে প্রশ্ন—জামায়াত-শিবিরের সাথে প্রকাশ্য বিরোধে জড়ানো কি ঠিক সিদ্ধান্ত?

 

আমরা বিশ্বাস করি, হ্যাঁ, এটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। কারণ বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ রাজনৈতিক দলগুলোর একটি। তারা না বুঝে কোনো পদক্ষেপ নেয়—এমনটা ভাবা নির্বুদ্ধিতা হবে।

 

যেভাবে জামায়াত-শিবির ও এনসিপি ঘুরেফিরে আবার আওয়ামী লীগে মিশে যেতে চাইছে বা তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলছে, সেখানে বিএনপি কি সেই পুরনো দলে ভর দিয়ে সামনে এগোবে? ভবিষ্যতের রাজনীতিতে বিএনপি কার ওপর ভরসা করবে? আওয়ামী লীগ কি বিএনপির পাশে এসে দাঁড়াবে? ইতিহাস বলে—তা সম্ভব নয়।

 

বিএনপি এক বিপুল সংখ্যক ত্যাগী নেতা-কর্মীর দল। যারা আন্দোলনের মাঠে বুক পেতে দেয়, জীবন দেয়, গুলি খায় ? শহীদ আবু সাঈদ তারই এক জ্বলন্ত উদাহরণ , যদিও আবু সাঈদ বি এন পি ছিলেন না ! তিনি কোনো উচ্চপদস্থ নেতা ছিলেন না, তবু তিনি বেছে নিয়েছিলেন আত্মত্যাগ। শিবিরের প্রতিটি কর্মী আবু সাঈদ হয়ে ওঠার মানসিকতা নিয়ে এগোয়, বিএনপির মাঝেও এমন অনেক শহীদের উত্তরসূরি আজও আছেন—তারা সময়মতো সামনে আসবেন।ষোল বছর আড়ালে ছিলেন কারণ তখন আপা ছিল , এখন সাহস হয়েছে !

 

বিএনপি যদি জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে বিরোধে যায়, কার লাভ হবে? আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে, এতে বিএনপি একটি অংশের সমর্থন হারাবে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে একটি বিতর্কিত রাজনৈতিক গোষ্ঠী থেকে নিজেদের দূরে রাখা হয়তো বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়াবে। একই সঙ্গে, বড় একটা প্রশ্ন থাকে—যদি ভবিষ্যতে বিএনপি চরম সংকটে পড়ে, তখন পাশে কে থাকবে?

 

আওয়ামী লীগ তো বরাবরই রাজনীতি করেছে প্রয়োজন মতো জোট গঠন করে। তারা জামায়াতের সঙ্গেও গেছে, জাতীয় পার্টিকেও আগলে রেখেছে। তাই বিএনপিকে এখনই বুঝতে হবে—এখনকার মিত্র কে, আর ভবিষ্যতের মিত্র কাকে বানানো উচিত।

 

এমন সময়ে যখন আওয়ামী লীগ নিজেই বিভ্রান্ত, জনবিচ্ছিন্ন ও আত্মরক্ষামূলক রাজনীতিতে ব্যস্ত, তখন বিএনপির উচিত ছিল আরও সুপরিকল্পিত এগোনো। বিরোধে না গিয়ে হয়তো সংযম দেখানো যেত। কিন্তু রাজনীতির বাস্তবতা অন্য কথা বলে—অনেক সময় আত্মরক্ষার তাগিদেই দ্বন্দ্বে জড়াতে হয়।

 

শেখ হাসিনা ‘চেতনা’র নামে যেভাবে জামায়াত-শিবিরকে নিধন করার চেষ্টা করেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। কারণ এই প্রচেষ্টা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার চেয়েও অনেক সময় ছিল চিত্রনাট্যভিত্তিক। আজ যখন ছাত্রলীগেরই কর্মীরা নিখোঁজ, যখন দলীয় প্রশাসন হয়েও মানুষ বিরক্ত, তখন আওয়ামী লীগ নিজেরাই ধাক্কা খাচ্ছে।

 

তারেক রহমান আজ বাংলাদেশের রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নাম। খুব অল্প বয়সে তিনি এক অদৃশ্য চক্রান্তের শিকার হয়েছেন। জেলে গেছেন, গুরুতর শারীরিক ক্ষতি করা হয়েছে। তাকে একেবারে নিঃশেষ করে দেওয়ার চেষ্টা ছিল সুপরিকল্পিত। কিন্তু আল্লাহর রহমতে, তিনি এখনও আছেন, লড়ছেন, এবং প্রমাণ করছেন—সাহস হারায়নি।

 

আজ একটি গোষ্ঠী তাকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়, দেশকে বিশৃঙ্খলার পথে ঠেলে দিতে চায়। দুঃখের বিষয়, বিএনপির ভেতরেই কেউ কেউ সেই পরিকল্পনার বাইরে নয়।

 

আওয়ামী লীগ এক সময় সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রেখেও পরিস্থিতির চাপে মাঠ ছেড়ে দিয়েছে। এখন যারা মনে করছেন বিএনপিও তেমন হবে, তারা হয়তো ভুল করছেন। তবে শর্ত একটাই—বিএনপিকে সজাগ থাকতে হবে, ভেতরের ষড়যন্ত্র বুঝতে হবে, আর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস না দেখিয়ে কৌশলগতভাবে সামনে এগোতে হবে।

 

বাংলাদেশের মানুষ সব দেখছে। তারা আবেগ দিয়ে নয়, বাস্তবতা দিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। বিএনপির সামনে এখন একটাই সুযোগ—বিশ্বাস অর্জনের। তারা যদি আদর্শ হারিয়ে বিতর্কিত দ্বন্দ্বে জড়ায়, তাহলে তার ফল ভয়াবহ হতে পারে, এমনকি জিয়া পরিবারও রেহাই পাবে না।

 

আর যদি তারা নিজেদের এক সুসংগঠিত, আধুনিক, সাহসী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রমাণ করে, তাহলে একদিন হয়তো তারেক রহমানের নেতৃত্বেই বাংলাদেশ ফিরে পাবে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ। 

প্রিসিলার ফেসবুক পেজ থেকে হুবহু তুলে ধরা হয়েছে