জেরুজালেমকে ঘিরে মুসলমান এবং খ্রিস্টানদের মধ্যে সংগঠিত যুদ্ধসমূহ ক্রুসেড হিসেবে পরিচিত। আজকের এই দিনে অর্থাৎ ১৫ জুলাই ১০৯৯ খিস্টাব্দে ক্রুসেডাররা বায়তুল মুকাদ্দাসকে তাদের আয়ত্তে নেয়। যেহেতু বায়তুল মুকাদ্দাস জেরুজালেমের প্রাণকেন্দ্র। বায়তুল মুকাদ্দাস দখলে আসা মানেই জেরুজালেম হাতের মুঠোয় নেওয়া।
জেরুজালেমকে মূলত মুসলমান, খ্রিস্টান এবং ইহুদিদের পবিত্র স্থান বলে মনে করা হয়। সেখানে মুসলমানদের পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস, ইহুদিদের পবিত্র টেম্পল মাউন্ট এবং খ্রিস্টানদের পবিত্র গির্জা অবস্থিত। বায়তুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের প্রথম কিবলা এবং এখান থেকেই মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) প্রথম মেরাজে যান। এই জেরুজালেমেই খ্রিস্টানদের পিতা যীশু খ্রিস্টকে ক্রুশ বিদ্ধ করা হয়।
জেরুসালেম শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়া আর মুসলমানদের আধিপত্য ঠেকানোর উদ্দেশ্যেই মূলত শুরু হয়েছিল খ্রিষ্টান আর মুসলমানদের মধ্যে ধর্মযুদ্ধ। খ্রিষ্টানরা যাকে ক্রুসেড বলে বর্ণনা করেন। মুসলমানরা অনেক সময় একে জিহাদ বলে অভিহিত করেছেন। পরের তিনশো বছর ধরে খ্রিষ্টানদের ক্রুসেড চলেছে।
প্রথম ক্রুসেডের সূত্রপাত হয় পোপ দ্বিতীয় উর্বানের মাধ্যমে। তিনি ১০৯৫ সালে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য হতে সহায়তা চান। প্রথমে ক্রুসেড বলতে মুসলমানদের কাছ থেকে জেরুসালেম শহর ফিরিয়ে নেওয়ার ইউরোপীয় প্রচেষ্টাকে বোঝানো হত। পরবর্তীতে অ-খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে ইউরোপীয়দের যেকোন সামরিক প্রচেষ্টাকে ক্রুসেড বলা শুরু হয়।
ক্রুসেডারেরা মধ্যপ্রাচ্যে সামন্তবাদী রাজ্য স্থাপনে সমর্থ হয়েছিল। তাই ক্রুসেডগুলিকে ইউরোপীয় সম্প্রসারণবাদ ও উপনিবেশবাদের একটি আদি রূপ হিসেবে কল্পনা করা যেতে পারে। এগুলিতেই প্রথমবারের মত ইউরোপীয় খ্রিস্টানেরা দেশ থেকে বহুদূরে সামরিক অভিযানে বের হয় এবং বহু সংখ্যায় তাদের সংস্কৃতি ও ধর্ম বিদেশে নিয়ে যাবার চেষ্টা চালায়।
ক্রুসেডগুলি ছিল যুদ্ধভিত্তিক খ্রিস্টধর্ম ও খ্রিস্টান ইউরোপের সম্প্রসারণের বহিঃপ্রকাশ। এগুলিতে ধর্মীয় চেতনার সাথে ধর্মনিরপেক্ষ সামরিক চিন্তাধারার মিলন ঘটেছিল। এগুলির ফলে খ্রিস্টানেরা অন্য সংস্কৃতিতে বাস করা শেখে এবং একই সাথে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির মাধ্যমে এগুলিকে প্রভাবিত করে। এগুলি আজও ইউরোপে মধ্যযুগের সবচেয়ে বিখ্যাত ঘটনা হিসেবে দেখা হয়।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |