
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে কারা সংসদে যাবে, তার নির্ধারকের ভূমিকায় থাকবে এনসিপি। তিনি বলেন, “আমাদেরকে হয় শাপলা দিতে হবে, না হয় কেন শাপলা দেওয়া হবে না, তার আইনগত ব্যাখ্যা নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে।” সারজিস আলমের দাবি, এনসিপির প্রতীক ‘শাপলা’ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনো ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা গ্রহণযোগ্য নয়। আইনগতভাবে এনসিপির প্রতীক ব্যবহারে কোনো বাধা না থাকলেও কমিশন যদি ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা দেয়, তবে তা প্রতিষ্ঠানটির গ্রহণযোগ্যতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে তারা আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজপথেও আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, এনসিপি বিশ্বাস করে, জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণই হচ্ছে রাজনীতির মূল লক্ষ্য। জুলাই সনদের মাধ্যমে জনগণের যে প্রত্যাশাগুলো বাস্তবায়নের কথা ছিল, তার আইনি ভিত্তি ও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না দেখে এনসিপি কেবল দায়সারা মনোভাবে কোনো সনদে স্বাক্ষর করবে না। “আমরা কোনো দলীয় সুবিধা চাইনি,”—বলেন সারজিস আলম—“যে বিষয়গুলোতে ঐক্যমত হয়েছে, সেই বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন আমরা চাই, তার নিশ্চয়তা চাই।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা কেবল নির্বাচনে অংশ নিতে বা কয়েকটি আসন পেতে এই সনদে স্বাক্ষর করিনি। কারণ এটা জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে যেত।”
সারজিস আলম বলেন, এনসিপি আগামী সংসদ নির্বাচনে শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করবে। জয়পুরহাটসহ উত্তরাঞ্চলের উন্নয়ন, অবহেলা নিরসন এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষাই হবে এনসিপির রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এনসিপি এমন একটি দল, যারা জনগণের স্বার্থকে সবার আগে প্রাধান্য দেয়। জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে পারলেই দেশের স্বার্থ রক্ষা সম্ভব, এ বিশ্বাস থেকেই তারা রাজনীতি করছে।
ইলেক্টোরাল এলায়েন্স প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এনসিপি কারও সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। যদি কোনো রাজনৈতিক দল জুলাই সনদের প্রতিটি বিষয়ের প্রতি কমিটেড থাকে, জনগণের প্রত্যাশা বাস্তবায়নে আন্তরিক থাকে এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের মতো অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়—তাহলে এনসিপি তাদের সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে। অন্যথায় এনসিপি নিজস্ব পরিচয়ে ও প্রতীক নিয়ে স্বাধীনভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে।
সারজিস আলম বলেন, আগামীর বাংলাদেশে রাজনীতি হতে হবে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে। এনসিপি সেই দিকেই এগোচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, “যদি নির্বাচন কমিশন আইন লঙ্ঘন করে আমাদের প্রতীক আটকে দেয়, তাহলে আমরা শুধু আইনি লড়াই নয়, রাজনৈতিকভাবেও রাজপথে নেমে প্রতিবাদ জানাবো।”
সংবাদ সম্মেলনে সারজিস আলমের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়—এনসিপি এখন শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, বরং নিজেদেরকে আগামীর রাজনীতিতে একটি নির্ধারক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তারা জনগণের স্বার্থ, সনদের বাস্তবায়ন ও ন্যায্য রাজনীতির পক্ষে অবস্থান নিয়ে আগামীর বাংলাদেশে অংশীদার হতে চায়।












































