
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিটি) দায়ের হওয়া গুমের দুটি মামলায় ২৫ জন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর সেনাবাহিনীকে ঘিরে নানামুখী জল্পনা শুরু হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা.জাহেদুর রহমান বলেন, “অভিযুক্ত সেনা অফিসারদের ইস্যু ব্যবহার করে আবারও সেনাপ্রধানকে টার্গেট করার চেষ্টা হচ্ছে।”
শনিবার (১১ অক্টোম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব আলোচনা করেন।
জাহেদুর রহমান বলেন, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া সর্বশেষ ব্রিফিং স্পষ্ট করেছে যে, প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেনাবাহিনী অভিযুক্তদের দায় নেবে না। ‘এটা অত্যন্ত ইতিবাচক পদক্ষেপ।’ তবে একই সঙ্গে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এই ইস্যুটিকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে সেনাবাহিনীর ভেতর বিভ্রান্তি তৈরির প্রচেষ্টা চলছে।
তিনি আরও বলেন, আইসিটি যেভাবে ২৫ জনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছে—এর মধ্যে ১৫ জন সার্ভিং অফিসার, ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত এবং একজন পিআরএলে থাকা কর্মকর্তা। “বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সার্ভিং অফিসারের বিরুদ্ধে এমন পরোয়ানা জারি হলো। এটি আইনগতভাবে জটিল এবং রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল। এই অবস্থায় কিছু পক্ষ চায় সেনাবাহিনী ও সরকারের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি হোক।
এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, সেনাবাহিনী অভিযুক্ত অফিসারদের নিজ হেফাজতে নিয়েছে, যা একদিকে আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হলেও অন্যদিকে এটি তাদের দায় অস্বীকারের একটি ইঙ্গিতও বটে। “এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো—তাদের বিচার কোন আইনে হবে? সেনা আইন না কি আইসিটি আইন? এ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে,” বলেন তিনি।
জাহেদুর রহমান মনে করেন, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারকে ঘিরে “দায় চাপানোর রাজনীতি” সচেতনভাবে চালানো হচ্ছে। “যেখানে যেকোনো বিতর্কে সেনাবাহিনীর নাম আসে, সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসিনার দালাল, ভারতের দালাল বলে আক্রমণ করা হয়—এটা পরিকল্পিত অপচেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার আমলে সেনাবাহিনীর একটি অংশ সরকারের স্বার্থে ব্যবহৃত হলেও, প্রতিষ্ঠানটি সামগ্রিকভাবে জাতীয় স্বার্থেই কাজ করছে। “বর্তমান সেনাপ্রধানকে সরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা কেবল বাহিনী নয়, রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতাকেও হুমকিতে ফেলবে,” বলেন জাহেদুর।
তিনি আহ্বান জানান, “আগামী নির্বাচনের প্রাক্কালে সেনাবাহিনী ও সরকারের মধ্যে কোনও বিভাজন তৈরি না করে- আইন,সংবিধান ও ইনসাফের পথে থেকেই এই জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।”
সুত্রঃ ইননকিলাব












































