প্রচ্ছদ রাজনীতি অবশেষে পদত্যাগ করছেন দুই উপদেষ্টা? নেপথ্যে যা জানা গেল

অবশেষে পদত্যাগ করছেন দুই উপদেষ্টা? নেপথ্যে যা জানা গেল

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই পদ ছাড়তে পারেন অন্তর্বর্তী সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টা, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়েই তাদের পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।

তবে হঠাৎ করেই সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এই দুই উপদেষ্টাকে সরে যাওয়ার পরামর্শ আসায় রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, মাহফুজ আলম এখন পর্যন্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহ দেখাননি এবং তিনি সরকারের অংশ হিসেবেই থাকতে চান। অন্যদিকে আসিফ মাহমুদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই পদত্যাগ করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে দুই উপদেষ্টার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে গত ১৪ আগস্ট সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আসিফ মাহমুদ জানান, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তিনি পদত্যাগ করবেন। অপরদিকে মাহফুজ আলম ২৮ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে বলেন, গত দুই মাস ধরে তিনি পদত্যাগ করা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন।

সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, ছাত্র প্রতিনিধিদের অনেকে চান অন্তত একজন ছাত্র উপদেষ্টা পরিষদে থাকুক। তাদের আশঙ্কা, পরিষদে কেউ না থাকলে কেউ কেউ তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ধারণা করা কঠিন নয় যে এই দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টা এনসিপির ঘনিষ্ঠ। তারা দলটির পরামর্শকের ভূমিকায় থাকেন বলেও অনেকে মনে করেন। সবশেষ জুলাই মাসে জাতীয় সনদ স্বাক্ষর নিয়ে তৈরি হওয়া সংকটের সময় ১৪ অক্টোবর রাতে জাতীয় ঐক্যমত কমিশনে এনসিপির সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্য নেতাদের পাশাপাশি একজন ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাও অংশ নেন।

এনসিপির নেতারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সময় বিভিন্ন দলের কাছ থেকে প্রস্তাবিত নামের ভিত্তিতেই উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হয়েছিল। তাই শুধুমাত্র দুইজন ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাকে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এনসিপি নেতারা এই বিষয়টি বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে উত্থাপন করেছেন বলেও একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে যেসব বক্তব্য আসছে, তা সরকার ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনূসের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর। এতে জনগণের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার উচিত সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া। দুই ছাত্র উপদেষ্টার হয় পদত্যাগ করা উচিত, নয়তো প্রকাশ্যে ঘোষণা দেওয়া উচিত যে তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন না এবং এনসিপির সঙ্গে তাদের কোনো প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য সম্পর্ক নেই।”

সুত্রঃ দৈনিক জনকন্ঠ