ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদিকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করার পর তার অসমাপ্ত সংগ্রাম এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তার মেজো ভাই ওমর বিন হাদি।
তিনি বলেন, তাদের পরিবার কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা বা অনুদান প্রত্যাশা করে না। ওসমান যে আদর্শ ও বিপ্লবী আন্দোলনের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, সেটিই পূর্ণ বাস্তবায়ন দেখতে চায় পরিবার।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকালে মগবাজারে জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন ওমর বিন হাদি।
তিনি আরও বলেন, “ওসমান প্রায়ই আমাকে বলত—আমি যদি একদিন রবের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে যাই, তাহলে তুমি শহীদের ভাই হবে, আর আমার মা হবে শহীদের মা। এর চেয়ে বড় গর্ব আর কিছু নেই। কিন্তু আমি শহীদের ভাই হতে চাইনি।
আমি চেয়েছিলাম রাজপথে বিপ্লবী ওসমানের পাশে দাঁড়িয়ে এই দেশকে আধিপত্যবাদমুক্ত করতে। ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না—এটাই ছিল আমাদের অঙ্গীকার। আজ ওসমান আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। আল্লাহ তাকে সর্বোচ্চ পুরস্কার দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন।”
ওমর বিন হাদি বলেন, শুক্রবার জুমার নামাজের পর গুলিবিদ্ধ হওয়ার এক সপ্তাহ পর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন ওসমান হাদি। তার শাহাদাতে পরিবার, ইনকিলাব মঞ্চ এবং আন্দোলনের সহযোদ্ধারা গভীরভাবে শোকাহত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আমরা এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারি নাই। জানিনা আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবো কিনা।
বক্তব্যে শেষে তিনি ওসমান হাদির আট মাসের সন্তানের জন্য, তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া চান। বাবার মৃত্যুর পর দুই ভাইকে বড় করার ক্ষেত্রে ছোট বোনের ত্যাগের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। মানসিকভাবে ভেঙে পড়া বোনের সুস্থতার জন্যও সবার কাছে দোয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সরকার যদি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তা জনগণের সামনে স্পষ্ট না করে, তাহলে মানুষের কাছে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হবে।
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডে যারাই জড়িত থাকুক এমনকি তারা যদি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যও হয়, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার পরদিন একজন সংসদ সদস্য প্রার্থীর হত্যাকাণ্ডকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলা যায় না। এর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দায় নির্বাচন কমিশনকেও নিতে হবে।
