প্রচ্ছদ আন্তর্জাতিক সেনাবাহিনীর ভয়াবহ সংঘর্ষে, ৮ জনের মৃত্যু

সেনাবাহিনীর ভয়াবহ সংঘর্ষে, ৮ জনের মৃত্যু

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খণ্ডে দেশটির সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৮ মাওবাদী বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। সোমবার সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে ওই মাওবাদী বিদ্রোহীরা নিহত হয়েছেন বলে দেশটির পুলিশ জানিয়েছে।

কয়েক দশক ধরে চলা মাওবাদীদের বিদ্রোহে দেশটিতে ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। মাওবাদী বিদ্রোহীরা ভারতের খনিজ-সমৃদ্ধ মধ্যাঞ্চলীয় ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ডসহ বিভিন্ন রাজ্যের প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকারের জন্য বছরের পর বছর ধরে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

ঝাড়খণ্ড পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সুরেন্দ্র কুমার ঝা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, সোমবার ভোরের দিকে খনিজ-সমৃদ্ধ ঝাড়খণ্ড রাজ্যের বোকারো জেলার বনাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মাওবাদী বিদ্রোহীদের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে।

তিনি বলেন, ভোরের দিকে শুরু হওয়া এই বন্দুকযুদ্ধে অন্তত ৮ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষস্থলে অভিযান চালিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী বেশ ‍কিছু স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে।

গত বছর দেশটির আইনশৃঙ্খলাবাহিনী অন্তত এক হাজার সন্দেহভাজন নকশালপন্থীকে গ্রেপ্তার করেছে। একই সময়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে আরও ৮৩৭ মাওবাদী বিদ্রোহী। এছাড়া একই সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে ৪০০ জনের বেশি মাওবাদী যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত বছরের সেপ্টেম্বরে মাওবাদী বিদ্রোহীদের ‘আত্মসমর্পণ’ অথবা ‘সর্বাত্মক হামলার’ মুখোমুখি হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ২০২৬ সালের প্রথম দিকেই মাওবাদী বিদ্রোহ দমনের আশা করছে।

চীনা বিপ্লবী নেতা মাও সেতুংয়ের কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৬৭ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন ভারতের মাওবাদী বিদ্রোহীরা। আদিবাসী অধিকার বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর পক্ষে লড়াইয়ের দাবি করা মাওবাদীরা নকশাল নামেও পরিচিত। মাওবাদীরা স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য জমি, চাকরি এবং ওই অঞ্চলের অপরিসীম প্রাকৃতিক সম্পদের মালিকানা দাবি করে।

মাওবাদী বিদ্রোহীরা ভারতের পূর্ব এবং দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে কয়েকটি প্রত্যন্ত এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছে। ২০০০ এর দশকের গোড়ার দিকে মাওবাদীদের এই আন্দোলন ব্যাপক শক্তিশালী হয়ে ওঠে ও সংগঠনটিতে ব্যাপক জনবল অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

এরপর নয়াদিল্লি ‘‘রেড করিডোর’’ নামে পরিচিত ওই অঞ্চলে কয়েক হাজার সেনা মোতায়েন করে। এই সংঘাতে দেশটির সরকারি বাহিনীও বিভিন্ন সময়ে প্রাণঘাতী হামলার শিকার হয়েছে। গত জানুয়ারিতে রাস্তার পাশে মাওবাদীদের পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৯ ভারতীয় সৈন্য নিহত হন। সূত্র : এএফপি।

Po