প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ শেখ হাসিনার কৌশল সফল

শেখ হাসিনার কৌশল সফল

জাতীয়: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কৌশলী চাল সফল হয়েছে, এমন কথা বলা ভুল হবে না। প্রধান বিরোধী দল বিএনপির বর্জনের মধ্যে সারাদেশে গড়ে ৪০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি নিঃসন্দেহে এ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ রাখেনি।

তা ছাড়া নির্বাচন নিয়ে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অভিমতও নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরে। ফলাফলে দেখা যাচ্ছে অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী এবং বর্তমান সরকারের মন্ত্রীও নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে। এটিও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রমাণ দেয়। এখন দেখার বিষয় হলো, যুক্তরাষ্ট্রসহ যেসব পশ্চিমা দেশ নির্বাচন নিয়ে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছিল তারা কী ভূমিকা নেয়। অভ্যন্তরীণভাবে দেশবাসীর জন্য কৌতূহলের বিষয় হবে আগামী সংসদে বিরোধী দলের আসন কারা নেবে সে প্রশ্নের কী মীমাংসা হচ্ছে তা।

এ লেখাটি যখন লিখছি তখনো ফলাফল সম্পূর্ণ হাতে আসেনি, তবে মনে হচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সংসদে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকছে। এ ক্ষেত্রে বলা যায়, তারা একজোট হয়ে স্বতন্ত্র দল নামে একটি দল গঠন করতে পারে। এখানে উল্লেখ করা যায় ভারতে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে ১৯৫৯ সালে সেদেশের প্রবীণ রাজনীতিবিদ চক্রবর্তী রাজা গোপালাচারি গঠন করেছিলেন স্বতন্ত্রী পার্টি।

তার সাথে ছিলেন বিখ্যাত সমাজতত্ত্ববিদ মিনু মাসানি, তরুণ রাজনীতিক পিলু মোদি প্রমুখ। গোপালাচারি মনে করতেন জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে কংগ্রেস ক্রমেই বামপন্থি দলে পরিণত হচ্ছে। তাই তিনি মধ্য ডানপন্থি দল হিসেবে স্বতন্ত্র পার্টি গঠন করেছিলেন। দলটি ১৯৭৪ সন পর্যন্ত সক্রিয় ছিল, পরে ভারতীয় লোকদলের সঙ্গে একীভূত হয়। এদেশে অনেকের প্রত্যাশা হলো মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত দেশের বিরোধী দলও হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইতিহাসে বিশ্বাসী ও তাতে দায়বদ্ধ।

আন্তরিকভাবে চেষ্টা করলে এদেশের স্বতন্ত্র দল এমন ভূমিকা পালন করতে পারে। এখানে হয়তো সমালোচনাটা হতে পারে যে বর্তমান আওয়ামী লীগ ক্রমেই দক্ষিণপন্থা ও রাজনীতিতে ধর্মকে ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে। তার বিকল্প মধ্যবাম দল গঠন হবে এখন ইতিহাসের দাবি।

যা-ই হোক আপাতত বলতে হবে যে এ নির্বাচনে রাজনীতিক শেখ হাসিনা বিজয়ী হয়েছেন। তাকে আমরা অভিনন্দন জানাই। এবার চতুর্থ দফায় তার কাছে দেশবাসীর কামনা হবে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশিÑ ১. সরকার ও প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা, ২. সুশাসন নিশ্চিত করা, ৩. অর্থনীতিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও দুর্নীতি বন্ধ করা, ৪. দলীয় নেতা-কর্মীদের ক্ষমতার দাপট বন্ধ করা এবং ৫. সমালোচনা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়ে আন্তরিক ভূমিকা গ্রহণ। আশা করি শেখ হাসিনা এদিকে নজর দেবেন।

সব শেষে বলতে হবে যে বিএনপির নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। আর নির্বাচন চলাকালে ও নির্বাচনের পর তাদের নেতাদের বক্তব্য বাস্তবতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়নি। বর্জন ও প্রতিরোধের লাইনে চললে যে কোনো দলকে সহিংসতার দায় নিতে হয় যা শেষ পর্যন্ত দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপির জন্য সুস্থ ধারার রাজনীতি এগিয়ে নেওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়ল।

বিজয়ী দলকে অভিনন্দন জানিয়ে আমরা স্মরণ করিয়ে দেব দেশবাসী চায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। বড় দলসহ সব রাজনৈতিক দলের কাছ থেকেই কাম্য হলো দায়িত্বশীল দেশপ্রেমিক ভূমিকা। আশা করি তাদের দায়িত্বের কথা রাজনীতিবিদরা মনে রাখবেন।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।