প্রচ্ছদ অর্থনীতি রাতের ব্যবধানে ১০০ টাকা বাড়ল মুরগির দাম!

রাতের ব্যবধানে ১০০ টাকা বাড়ল মুরগির দাম!

জাতীয়: এক রাতের ব্যবধানে চট্টগ্রাম নগরের বেশিরভাগ দোকানে বেড়েছে মুরগির দাম। ২০-৫০ টাকা তো আছেই, এবার একশ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে প্রতিকেজি দেশি মুরগির দাম।

শুধু দেশি নয়, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দামও বেড়েছে সমানতালে। এমন পরিস্থিতি বিপাকে ফেলেছে ভোক্তাদের। বাজার থেকে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে বেশিরভাগ ক্রেতার। তাদের অভিযোগ, হুট করে এক রাতের ব্যবধানে কীভাবে দাম এত বৃদ্ধি পায়!

অন্যদিকে এই সিন্ডিকেট ভেঙে পণ্যের সহনশীল দাম নির্ধারণের সহযোগিতা করতে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। বাজার তদারকির দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, ভোগ্যপণ্যের বাজার মনিটরিংয়ে কাজ করছে জেলা প্রশাসনের বিশেষ টিম। পণ্যের অতিরিক্ত দাম হাঁকা হলেই নেওয়া হবে ব্যবস্থা।

শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাজীর দেউরি কাঁচা বাজারের মুরগির দোকানে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৫৭০ টাকায়। অথচ বৃহস্পতিবার এই মুরগির দাম ছিল প্রতিকেজি ৪৮০ টাকা। অর্থাৎ এক দিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে প্রতিকেজি ৯০ টাকা। শুক্রবার ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৯০ টাকা। অথচ বৃহস্পতিবার এই মুরগির দাম ছিল প্রতিকেজি ১৭০ টাকা। অর্থাৎ এক দিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে প্রতিকেজি ২০ টাকা।

সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৩৩০ টাকা। অথচ বৃহস্পতিবার এই মুরগির দাম ছিল প্রতিকেজি ২৬০ টাকা। অর্থাৎ এক দিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে প্রতিকেজি ৭০ টাকা।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাজীর দেউরি কাঁচা বাজারের মুরগির দোকানি এস এয়াকুব আলী কালবেলাকে বলেন, বৃহস্পতিবার দেশি মুরগি বিক্রি হয়েছিল প্রতিকেজি ৪৮০ টাকা। তবে আজ (শুক্রবার) এই মুরগি কেনা পড়েছে প্রতিকেজি ৫২০ টাকায়। বৃহস্পতিবার ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল প্রতিকেজি ১৭০ টাকা। আজ (শুক্রবার) এই মুরগি কেনা পড়েছে প্রতিকেজি ১৮০ টাকায়। বৃহস্পতিবার সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছিল প্রতিকেজি ২৬০ টাকা। আজ এই মুরগির কেনা পড়েছে প্রতিকেজি ২৭৫ টাকায়।

একই অবস্থা চট্টগ্রামের দুই নম্বর গেটের কর্ণফুলী মার্কেটে। বিভিন্ন শেডের মুরগির দোকানে দেওয়া তালিকায় বলা হয়েছে, দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৫৭০ টাকায়, সোনালি মুরগি প্রতিকেজি ৩৪০ টাকায় ও ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি ২০০ টাকায়।

মুরগি কিনতে এসে খালি হাতে ফিরছিলেন রাজিব খানম নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী। কালবেলাকে তিনি বলেন, বাসায় মেহমান এসেছে। গতকাল দেশি মুরগির দাম দেখে গিয়েছিলাম প্রতিকেজি ৪৭০ টাকা। আজ সকালে বাজারে এসে মাথায় হাত। তারা দেশি মুরগি বিক্রি করছে প্রতিকেজি ৫৭০ টাকায়। শেষ পর্যন্ত সোনালি মুরগি দিয়ে মেহমান বিদায় করতে হচ্ছে।

নগরের বহদ্দারহাট কাঁচা বাজারের অবস্থা আরও খারাপ। মুরগির দোকান ঘুরে দেখা যায়, দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৫৮০ টাকায়, সোনালি মুরগি প্রতিকেজি ৩৫০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি ১৯০ টাকা।

রাজিব নন্দী নামে বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফআইডিসি) এক কর্মচারী মুরগি কিনতে যান সেখানে। তিনি বলেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য পরিস্থিতি যে নাজুক, সংসার কীভাবে চলবে বুঝছি না। ভেবেছিলাম অল্প টাকার মধ্যেই ব্রয়লার মুরগি কিনব, কিন্তু সবকিছুর মতো তাদেরও বিশাল সিন্ডিকেট। একসঙ্গেই সবাই বাড়িয়েছে দাম, পাওয়া যাচ্ছে না কম মূল্যে।

এদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা প্রায় সময় চাহিদা ও জোগানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতার অজুহাত দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে থাকেন। এবারও ভোক্তার পকেট কাটতে নতুন বাহানা তৈরি করেছে তারা। সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে এখনই। জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে কষ্টে পড়তে হবে ভোক্তাদের।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ভোক্তার প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে তারা প্রতারণার শিকার হলে আমাদের কাছে যেন অভিযোগ করে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব।

বাজার নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসনের একাধিক টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। তিনি বলেন, কোনো দোকানি অন্যায়ভাবে পণ্যের দাম বাড়ালে তা বরদাস্ত করা হবে না। আমাদের টিম মাঠে কাজ করছে, সুষ্ঠুভাবে প্রতিটি বিষয় লক্ষ রাখছে তারা। কত টাকায় পণ্য কেনা হয়েছে, বিক্রি হচ্ছে কত টাকায় সবই দেখা হচ্ছে। আশা করি সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ীরা ছাড় পাবে না।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।