
ভিয়েতনামে এক বিস্ময়কর ঘটনায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে দেশজুড়ে। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে—এক পরিবার যে মেয়েকে নিজের সন্তান ভেবে এতদিন লালন-পালন করেছে, সে আসলে তাদের মেয়ে নয়। তবে আরও অবাক করা বিষয় হলো, মেয়ের মা কোনো পরকীয়ায় জড়াননি; বরং জন্মের সময় হাসপাতালে দুই নবজাতককে অদলবদল করে ফেলা হয়েছিল।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনামের এই ঘটনায় প্রধান চরিত্র এক বাবা, মা ও তাদের কিশোরী মেয়ে লেন। লেন বড় হতে হতে যেমন বয়সে পরিণত হচ্ছিল, তেমনি তার সৌন্দর্যও ফুটে উঠছিল। কিন্তু এতে বাবা খুশি না হয়ে সন্দেহে ভুগতে থাকেন। তিনি কোনোভাবেই মেয়েকে নিজের পরিবারের সঙ্গে মেলাতে পারছিলেন না।
ক্রমে সেই সন্দেহ থেকে জন্ম নেয় পারিবারিক অশান্তি। বাবা ভাবতে শুরু করেন, তার স্ত্রী হং সম্ভবত বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছেন। এই সন্দেহ থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। একপর্যায়ে তিনি ডিএনএ পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন।
পরীক্ষার ফলাফল এলে পুরো পরিবারই হতবাক। রিপোর্টে দেখা যায়, লেন আসলে ওই দম্পতির জৈবিক সন্তান নন। কিন্তু স্ত্রীরও কোনো পরকীয়ার প্রমাণ মেলেনি। ফলে পরিবারটি আরও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে—তাহলে আসল ঘটনা কী?
দীর্ঘদিনের অশান্তি সহ্য করতে না পেরে মা হং মেয়ে লেনকে নিয়ে রাজধানী *হ্যানয়ে* চলে যান। সেখানে নতুন এক স্কুলে ভর্তি করানোর পর ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। স্কুলে লেনের সঙ্গে এক সহপাঠীর জন্মদিন একই দিনে পড়ে। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে মা হং লক্ষ্য করেন—মেয়ের ওই সহপাঠীর মুখাবয়ব তার তরুণ বয়সের সঙ্গে আশ্চর্যরকম মিল রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ জাগলে হং যোগাযোগ করেন সহপাঠীর পরিবারের সঙ্গে। তদন্তে জানা যায়, দুই মেয়ে একই হাসপাতালেই একই সময়ে জন্ম নিয়েছিল। উভয় পরিবার ডিএনএ পরীক্ষা করালে দেখা যায়—লেনের সহপাঠীই আসলে হং-এর জৈবিক মেয়ে, আর লেন জন্মেছিল অন্য দম্পতির ঘরে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাসপাতালের অবহেলার কারণে জন্মের পর নবজাতক দুটিকে ভুলবশত অদলবদল করা হয়েছিল। এর পর থেকে দুই পরিবারই ভুল সন্তানের সঙ্গে বছর ধরে জীবন কাটিয়েছেন। ঘটনাটি সামনে আসার পর পুরো ভিয়েতনাম জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
এখন দুই পরিবারই একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে এবং শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করছে।