বাংলাদেশ: যশোরের ধান্যখোলা সীমান্তে বিএসএফের (ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী) গুলিতে রইস উদ্দিন নামে বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) এক সদস্য নিহতের বিষয় জানেন না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডমিস্টিক কোনো বিষয়ে আমি এখনো মনোযোগ দিতে পারিনি। উগান্ডা থেকে দেশে ফিরে মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেখুন… আমি আজ দুপুরে এসেছি (উগান্ডা থেকে)। আমি ডমিস্টিক (অভ্যন্তরীণ) কোনো বিষয়ে এখনো মনোযোগ দিতে পারিনি। অবশ্যই এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য থাকে। সেটি আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলা হবে। এ বিষয়ে আমরা এখন কথা বলতে চাই না। এ ঘটনায় বিএসএফকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের পাশাপাশি কূটনৈতিকভাবে তীব্র প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়েছে। একইসাথে লাশ দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত আনার বিষয়ে সবপর্যায়ে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবি অধিনায়ক।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) গভীর রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি সদস্য নিহতের খবর জানান যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল। বিজিবি জানিয়েছে, সোমবার (২২ জানুয়ারি) ভোর ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ধান্যখোলা বিওপির জেলেপাড়া পোস্ট সংলগ্ন এলাকায় ভারত থেকে আসা একদল গরু চোরাকারবারিকে সীমান্ত অতিক্রম করে আসতে দেখলে দায়িত্বরত বিজিবি টহল দল তাদের চ্যালেঞ্জ করে। তখন তারা ভারতের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে বিজিবি সদস্য সিপাহী রইস উদ্দিন চোরাকারবারিদের ধাওয়া করতে করতে ঘন কুয়াশার কারণে দল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে বিজিবি জানতে পারে, তিনি বিএসএফের গুলিতে আহত হয়ে ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে মারা যান রইস উদ্দিন। এ ঘটনায় কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে, আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর স বৈঠক করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিজিবি সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনাকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী খালিদ। বিজিবি সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারতীয় দূতের সাথে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় গত শনিবার (২০ জানুয়ারি) জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বৈঠক করেন। বৈঠকে আলোচনার প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি (জয়শঙ্কর) ভারতের অভিনন্দন, সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন (দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে সরকার গঠন করায়)। তিনি (জয়শঙ্কর) আমাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি যাব। সফর নিয়েও আলোচনা হয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের সাথে আমাদের যে সম্পর্ক, আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বে যে উচ্চতায় পৌঁছেছে; সেটিকে আরো দৃঢ়, আরো বিস্তৃত করার ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি। বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভারতের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কাম্পালায় বৈঠক নিয়ে জয়শঙ্কর ওইদিন তার এক্স হ্যান্ডেলে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ‘শক্তিশালী থেকে আরো শক্তিশালী’ হচ্ছে। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি দ্বিপাক্ষিক সফরে দিল্লি যাবেন হাছান মাহমুদ। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের আমন্ত্রণে সেখানে যাবেন তিনি। সেই সফরে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ভারত সফর নিয়ে আমরা কাজ শুরু করব। আমি মাত্রই এসেছি।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |