
বগুড়া শহরের কইপাড়ায় নববধূ আফিয়া আকতার শম্পার (১৯) গলায় ফাঁস দেওয়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বামীই তাকে হত্যা করেছে বলে স্বজনদের অভিযোগ। এ ঘটনায় এলাকাবাসী তার স্বামী রিয়াজুল জান্নাতকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে।
রোববার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শম্পা কাহালু উপজেলার মুরইল পোড়ামারা গ্রামের আনোয়ারুল ইসলামের মেয়ে।
স্বজনরা অভিযোগ করেন, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে মাসখানেক আগে শম্পা বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে বিয়ে করে রিয়াজুল জান্নাতকে। বিয়ের পর তারা শহরের কইপাড়ায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যে যৌতুকলোভী স্বামী রিয়াজুলের আসল রূপ বেরিয়ে পড়ে। রিয়াজুল শম্পার বাবার কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা ও একটি আর ওয়ান ফাইভ মোটরসাইকেল যৌতুক হিসেবে এনে দিতে চাপ দিতে থাকে।
কিন্তু এতে নববধূ শম্পা অস্বীকৃতি জানালে তার ওপর নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে। ওই যৌতুকের জন্য তাকে মারধর করতে থাকে। এরই ধারবাহিক নির্যাতনের এক পর্যায়ে রোববার সন্ধ্যায় শম্পাকে তার স্বামী গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বলে স্বজনদের অভিযোগ।
শম্পার এক চাচা বলেন, হত্যার ২০ মিনিট আগে শম্পা তার বাবাকে ফোন দিয়ে বলেছিল ‘বাবা স্বামী আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে, তুমি আমাকে বাঁচাও।’ এরপর তারা কইপাড়ায় ওই ভাড়া বাড়িতে এসে দেখে শম্পার লাশ পড়ে আছে। পরে স্বজনদের চিৎকার শুনে এলাকাবাসী এসে বাড়ির জানালার সঙ্গে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় শম্পার লাশ দেখতে পান। এলাকাবাসী শম্পাকে হত্যার অভিযোগে তার স্বামী রিয়াজুল জান্নাতকে আটক করে রাখেন।
এরপর থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেয়। সেইসাথে তার স্বামী রিয়াজুলকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
বগুড়া সদর থানার ওসি হাসান বাসির জানান, শম্পার রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এলাকাবাসী তার মরদেহ জানালার গ্রিলের সঙ্গে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় নামান। তিনি আত্মহত্যা করেছেন না কি তাকে তার স্বামী মেরে ফেলেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তার মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ উদ্ধার মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় তার স্বামী রিয়াজুল জান্নাতকে আটক করে থানা নেওয়া হয়েছে।
সূত্র: কালবেলা












































