প্রচ্ছদ আন্তর্জাতিক বাড়ছে সেনাপ্রধানের ক্ষমতা

বাড়ছে সেনাপ্রধানের ক্ষমতা

সামরিক কাঠামোতে বড় পরিবর্তন আনছে পাকিস্তান। দেশটির সামরিক কাঠামোয় সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রেক্ষাপটে সংবিধানের ২৪৩ অনুচ্ছেদ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রোববার এতে অনুমোদন দিয়েছে যৌথ সংসদীয় কমিটি। জিও টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার অতিরিক্ত সংশোধনীর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিলটি সংসদে পাশ হলে সেনাপ্রধানের ক্ষমতা অনেকটা বেড়ে যাবে। শুধু সামরিক কাঠামোয় নয়, উচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন, প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধির প্রস্তাবও আনা হয়েছে বিলে। শনিবার বিতর্কিত ২৭তম এ সংবিধান সংশোধনী বিলটি সিনেটে উপস্থাপন করে পাকিস্তান সরকার। জিও টিভি, ডন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ আজারবাইজান থেকে ভার্চুয়ালি মন্ত্রিসভা বৈঠক পরিচালনা করে ২৭তম সংবিধান সংশোধনী খসড়ায় অনুমোদন দেন। এরপরই বিলটি সিনেটে উত্থাপন করা হয় এবং তা পাঠানো হয় আইন ও বিচারবিষয়ক স্থায়ী কমিটিতে। ২৬ পৃষ্ঠার এ বিলটি উপস্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার। পাশ হলে এটি ‘সংবিধান (২৭তম সংশোধনী) আইন, ২০২৫’ নামে পরিচিত হবে। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এটি সিনেটে তোলা হয়। সংশোধনী প্রস্তাব অনুযায়ী, সংবিধানের ২৪৩ ধারা, যেখানে বলা হয়েছে ‘সশস্ত্র বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ ও কমান্ড ফেডারেল সরকারের হাতে থাকবে’ এবং ‘সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হবেন রাষ্ট্রপতি’, এতে কিছু পরিবর্তন আনা হবে। খসড়া অনুযায়ী, সশস্ত্র বাহিনীর ‘চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি’ (সিজেসিএসসি) পদটি বাতিল করে নতুন একটি পদ তৈরি করা হবে ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস।’ বিলটিতে আরও বলা হয়েছে, সেনা কর্মকর্তা বা বিমান ও নৌবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের দেওয়া সম্মানসূচক উপাধি যেমন : ফিল্ড মার্শাল, মার্শাল অব দ্য এয়ার ফোর্স ও অ্যাডমিরাল অব দ্য ফ্লিট আজীবন বহাল থাকবে। এসব উপাধি বাতিল করার ক্ষমতা শুধু পার্লামেন্টের হাতে থাকবে বলেই জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী। সংশোধনীর আরেকটি বড় প্রস্তাব হলো-একটি নতুন আদালত গঠন করা। ফেডারেল কনস্টিটিউশনাল কোর্ট। এই আদালত প্রতিষ্ঠিত হলে সুপ্রিমকোর্টের কিছু ক্ষমতা কমে যাবে। খসড়ায় বলা হয়েছে, সংবিধানের কিছু বিশেষ এখতিয়ার সুপ্রিমকোর্ট থেকে সরিয়ে নতুন ফেডারেল সংবিধান আদালতে স্থানান্তর করা হবে। বিচারপতি নিয়োগে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। পাশাপাশি নতুন আদালতে বিচারপতির সংখ্যা নির্ধারণের ক্ষমতা থাকবে পার্লামেন্টের হাতে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ফেডারেল সংবিধান আদালতে দেশের সব প্রদেশের সমান প্রতিনিধিত্ব থাকবে। এই আদালতের প্রধান বিচারপতির মেয়াদ হবে তিন বছর।

এদিকে এই বিলের তীব্র সমালোচনা করেন বিরোধীরা। মজলিস-ই-ওয়াহদাত-ই-মুসলিমিনের সিনেটর ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) মনোনীত বিরোধীদলীয় নেতা আল্লামা রাজা নাসির আব্বাস বিলটিকে ‘সংবিধানের ওপর আক্রমণ’ বলে নিন্দা জানান।

সূত্র : যুগান্তর