বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা মনে করে না বর্তমান সরকার- বুধবার (১৬ অক্টোবর) অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টার এমন মন্তব্য মোটেও বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি আওয়ামী লীগ। জবাবে নিজেদের অবস্থান স্পস্ট করেছে দলটি। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দলের ফেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের একটি ছবি শেয়ার করা হয়। এর ক্যাপশন অংশে লেখা হয়, বঙ্গবন্ধু কি শুধু আওয়ামী লীগের? বঙ্গবন্ধু এই জাতির নেতা। তোমাদের নেতা পাকিস্তানের জিন্নারা হতে পারে, বাঙালি ও বাংলাদেশের নেতা জাতির পিতা শেখ মুজিূত্র
এর আগে বুধবার (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, এই সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক মনে করে না। এর পেছনের যুক্তিও তুলে ধরেন তিনি। জানান, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট দল হিসেবে ক্ষমতায় ছিল। মানুষের ভোটাধিকার হরণ ও গুম-খুন করে এবং গণহত্যা করে তারা ক্ষমতায় ছিল। কাজেই কারা তাকে জাতির পিতা বলল, তারা কোন দিবসকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করল, নতুন বাংলাদেশে সেটার ধারাবাহিকতা থাকবে না। আমরা বাংলাদেশকে নতুনভাবে গঠন করতে চাচ্ছি। ফলে ইতিহাসের প্রতি আমাদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আনতে হবে।
তাহলে তো আমাদের কোনো জাতির পিতা থাকবে না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের এই ভূখণ্ডের লড়াইয়ের ইতিহাসে বহু মানুষের অবদান রয়েছে। আমাদের ইতিহাস কিন্তু কেবল ’৫২-তেই শুরু হয়নি, আমাদের ব্রিটিশবিরোধী লড়াই আছে, ’৪৭ ও ’৭১-এর লড়াই আছে, ’৯০ ও ’২৪ আছে। আমাদের অনেক ফাউন্ডিং ফাদারস রয়েছে। তাদের লড়াইয়ের ফলে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, যেসব জাতীয় দিবস বাতিল করা হচ্ছে, সেগুলো চাপিয়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। ফ্যাসিস্ট আচরণ ছিল সেটা। সরকার মনে করেছে, সেগুলো গুরুত্বহীন, তাই বাতিল করা হচ্ছে।
এর পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির পিতা নয় বলে মন্তব্য করেন অন্তর্বতী সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি লিখেন, একটি দেশের জাতির পিতা কে হবে সেটা নির্ধারণ করবে সেই দেশের জনগণ, কোনো ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দল না। শেখ মুজিবুর রহমানকে যদি দেশের মানুষ জাতির পিতা মনে করতো তাহলে ৫ই আগস্ট বিপ্লবী ছাত্র-জনতা তার ভাষ্কর্য ভেঙে ফেলতো না। শেখ মুজিব জাতির পিতা নয়, আওয়ামী ফ্যাসিজম প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রতীকী মাধ্যম।
একইদিন আরেক বৈঠকে আটটি জাতীয় দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এগুলো হলো ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট: শেখ হাসিনার ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট: শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট: বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস, ১৮ অক্টোবর: শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল দিবস, ৪ নভেম্বর: জাতীয় সংবিধান দিবস ও ১২ ডিসেম্বর: স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস। শিগগিরই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এসব দিবস বাতিল করে পরিপত্র জারি করবে বলেও জানানো হয়।
সুূুত্রঃ ইত্তেফাক
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |