প্রচ্ছদ হেড লাইন নিকৃষ্ট সরকারের তালিকায় কয়েকটি দেশের অবস্থান প্রকাশ

নিকৃষ্ট সরকারের তালিকায় কয়েকটি দেশের অবস্থান প্রকাশ

হেড লাইন: গুরুত্বপূর্ণ প্রায় প্রতিটি মানদণ্ডে মিয়ানমারের জান্তা সরকার এখন বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ এবং নিকৃষ্ট শাসকগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে কমপক্ষে চার হাজার ৪৭৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি ২৫ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া সামরিক জান্তা সরকারের দেশব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের সময় ৭৮ হাজার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

এর সঙ্গে গোটা দেশ সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে গভীর সংকটে পড়ে গেছে। সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতির প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে, মূল বৈশ্বিক সূচকে এই সামরিক সরকার দেশটিতে গত তিন বছরে যেসব ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যের উদাহরণ তৈরি করেছে।

তীব্র মানবিক সংকট: তিন বছর আগের সেনা অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে মানবিক সংকট নাটকীয়ভাবে বেড়ে গেছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় এক কোটি ৮৬ লাখ বাসিন্দা বা দেশটির মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ, চলতি বছর জরুরি মানবিক সহায়তার আওতায় পড়ে গেছে। ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের আগে এমন চাহিদার আওতায় ছিল মাত্র ১০ লাখ মানুষ।

বিশ্বব্যাপী ‘ক্ষুধার হটস্পট’: মিয়ানমারকে শীর্ষে রেখে আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানকে বিশ্বব্যাপী ‘ক্ষুধার হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘ। যেখানে জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ বাসিন্দা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার আওতায় পড়ে গেছে। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম-এর তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকটের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা তীব্রভাবে বেড়ে গেছে। প্রায় ১ কোটি ২৯ লাখ বা প্রতি চারজনে একজন ভয়াবহ খাদ্য সংকটের শিকার।

এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল সবচেয়ে বিপজ্জনক: গ্লোবাল পিস ইনডেক্স বা বিশ্ব শান্তি সূচক-২০২৩ অনুসারে, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশগুলোর মধ্যে ১৮তম স্থানে রয়েছে সামরিক শাসনের অধীনে থাকা মিয়ানমার। এই অঞ্চলের একমাত্র দেশ উত্তর কোরিয়া মিয়ানমারের পরের অবস্থানে রয়েছে।

সবচেয়ে বড় কারাগার: অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস-এর তথ্য (এএপিপি) অনুসারে, ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মিয়ানমারে মোট ১৯ হাজার ৯৯৩ জন রাজনৈতিক বন্দী কারাভ্যন্তরে ছিল, যারমধ্যে তিন হাজার ৭৮০ জন নারী রয়েছেন। এমনকি আগের শাসনামলেও এই সংখ্যা কখনো তিন-চার হাজার ছাড়িয়ে যায়নি। মিয়ানমার শাসকগোষ্ঠী বিশ্বের সবচেয়ে ‘খারাপ জেলার’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। নির্বাচিত নেতা, তরুণ ছাত্র এবং বিভিন্ন পেশার সদস্য যারা ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা ও অধিকার আদায়ের দাবিতে প্রতিবাদ করেছেন বা লড়াই করেছেন তাদের কারাবন্দী করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সামরিক পোশাক পরা অপরাধীরা যারা যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যায় জড়িত তারা প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে রেখেছেন।

সাংবাদিক নির্যাতন: অভ্যুত্থানের পর থেকেই তিন বছরে স্বাধীন গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের বর্বরোচিতভাবে টার্গেট করেছে জান্তা সরকার। চীনের পরেই সাংবাদিকদের কারাগারে পাঠানো দেশের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মিয়ানমার। কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টের (সিপিজে) তথ্য অনুসারে, গত বছর ৪৩ জন সংবাদকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, চীনে ৪৪ জন সংবাদকর্মীকে কারাভ্যন্তরে পাঠানো হয়েছে। গত বছর বেলারুশের ২৮ জনসহ বিশ্বব্যাপী রেকর্ড ৩২০ সাংবাদিককে বন্দী করা হয়েছে।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।