প্রচ্ছদ আর্ন্তজাতিক নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে যত সময় লেগেছিল, জানা গেল ভয়াবহ তথ্য

নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে যত সময় লেগেছিল, জানা গেল ভয়াবহ তথ্য

আর্ন্তজাতিক: শ্বাস-প্রশ্বাসে অক্সিজেন গ্যাসের পরিবর্তে নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে বিশ্বের প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মৃত্যুদণ্ডটি কার্যকরের এ পদ্ধতিকে বলা হয় নাইট্রোজেন হাইপোক্সিয়া। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গরাজ্যে নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পদ্ধতিটি অনুমোদন পেয়েছে। তিনটি অঙ্গরাজ্য হলো- আলাবামা, ওকলাহোমা ও মিসিসিপি। গত বৃহস্পতিবার আলাবামা অঙ্গরাজ্যের হোলম্যান কারাগারে প্রথমবারের মতো নাইট্রোজেন হাইপোক্সিয়া ব্যবহার করে এক আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। আসামির নাম কেনেথ ইউজিন স্মিথ (৫৮)। দণ্ড কার্যকরের ক্ষেত্রে সময় লেগেছিল প্রায় ২২ মিনিট।

নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগের পরও কয়েক মিনিট পর্যন্ত তার জ্ঞান ছিল। দুই থেকে চার মিনিট পর্যন্ত তিনি স্ট্রেচারের ওপর ছটফট করেন। এরপর কয়েক মিনিট ধরে তার নিঃশ্বাস ভারি হয়ে যায়, পরে তার শ্বাসের গতি ধীর হয়ে আসে এবং তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন। মৃত্যুদণ্ডটি কার্যকরের এ পদ্ধতিকে বলা হয় নাইট্রোজেন হাইপোক্সিয়া। মূলত মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এ পদ্ধতিতে দণ্ডিতকে একটি মাস্ক পরিয়ে দেয়া হয়। এরপর তার শ্বাস-প্রশ্বাসে সাধারণ বিশুদ্ধ বায়ুর পরিবর্তে নাইট্রোজেন গ্যাস দেয়া হয়। ফলে ধীরে ধীরে তার মস্তিষ্ক ও শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমতে থাকে। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো আসামিকে এভাবে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার নজির নেই। নাইট্রোজেন গ্যাস বিষাক্ত নয়। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের তিন-চতুর্থাংশের বেশি নাইট্রোজেন হলেও শ্বাস-প্রশ্বাসে কোন সমস্যা হয় না। তবে বিশুদ্ধ ও ঘনীভূত আকারে গ্যাস নিশ্বাসের সাথে গ্রহণ করলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন কমে যায়। ফলে একটি অচেতন অবস্থা তৈরি হয়।

মস্তিষ্কে বা শরীরের টিস্যুতে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়াকে মূলত হাইপোক্সিয়া বলা হয়। এটি বিভ্রান্তি, অস্থিরতা, শ্বাস নিতে অসুবিধা, দ্রুত হৃৎস্পন্দন মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। ফলে, নিঃশ্বাসের সাথে নাইট্রোজেন গ্যাসের মাধ্যমে মস্তিষ্কে অক্সিজেন হ্রাস করেই এই পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মূলত বিষাক্ত ইনজেকশন ব্যবহারের বদলে মৃত্যুদণ্ডের পদ্ধতি আরও সহজ করতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়। আলাবামা সরকারের দাবি, এটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সবচেয়ে কম বেদনাদায়ক ও মানবিক পদ্ধতি। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য ২৭টি দেশ বিশ্বজুড়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিরোধিতা এবং সমালোচনা করেছে।সমালোচকেরা বলছেন, অপরীক্ষিতভাবে কেনেথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। আলাবামা কর্তৃপক্ষ তাকে ‘গিনিপিগ’ হিসেবে বেছে নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাস ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা সবশেষ দেখা গিয়েছিল ১৯৯৯ সালে। তখন হাইড্রোজেন সায়ানাইড গ্যাস ব্যবহার করে এক হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণত প্রাণঘাতী ইনজেকশন প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।