
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, এখন যেহেতু সরকারে যাওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, এনসিপিও সরকারে যেতে চায়, জামায়াতও সরকারে যেতে চায়, বিএনপিও সরকারে যেতে চায়। আপনি কার মন রক্ষা করবেন? আপনি যার মন রক্ষা করতে পারবেন না আপনার প্রতি তারা অসন্তুষ্ট হবে।
তিনি আরও বলেন, গতকাল (১৯ অক্টোবর) বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে আমার এক সাংবাদিকের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। বিএনপির কেন জানি মনে হচ্ছে আমরা তাদের পক্ষে লিখছি না। আমার সহকর্মীর ওপর যে আঘাত হয়েছে, আমি মনে করি সে আঘাত আমাকে করা হয়েছে। আমার সহকর্মীর ওপর আঘাত আর আমার ওপর আঘাতের মধ্যে কোনো পার্থক্য আমি দেখি না।
সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লার নবাব ফয়জুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে জুলাই যোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, আমাদের এডিটোরিয়াল প্রসেস খুব সহজ ছিল। আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লিখতাম।
তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের যাদের সম্পর্কে লিখতে হবে তারা সবাই জুলাইযোদ্ধা। বিএনপি জুলাইযোদ্ধা, জামায়াত জুলাইযোদ্ধা, এনসিপি তো জুলাইয়ের মহানায়ক। এনসিপি তো জুলাইয়ের নেতৃত্ব দিয়েছে। এই যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যখন আমি লিখব, তখন পেশাদারিত্বের সঙ্গে লিখতে গেলে তাদের কারও না কারও সমালোচনা তো করতে হবে। কারণ সবাই তো আর সঠিক কাজ করে না। আমি নিজেও তো সঠিক কাজ করি না। সংবাদপত্রের কাজটা এমনই, লিখতে হয়। লিখতে গিয়ে আমরা অনেক শত্রু বানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, দৈনিক আমার দেশ বাংলাদেশের পক্ষে, কোনো দলের পক্ষে নয়। এটা যদি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বুঝতে পারতেন তাহলে আমাদের কাজটা অনেক সহজ হয়ে যেত। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এত বড় বিপ্লবের পরেও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এই বিষয়টি বুঝতে পারেননি।
মাহমুদুর রহমান বলেন, কুষ্টিয়াতে ২০১৮ সালে আমাকে যেভাবে রক্তাক্ত করা হয়েছিল এবং গতকাল চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে যেটা করা হয়েছে দুইটার মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই। দুইটা ঘটনা একই। তাহলে আমরা এত বড় বিপ্লব থেকে কী শিখতে পেলাম?
রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সমালোচনাকে গ্রহণ করতে শিখুন। সমালোচনাকে মানতে হবে আপনাকে। তার সঙ্গে আমাদের দায়িত্ব পেশাদারিত্ব বজায় রাখা। কিন্তু আপনাদের সমালোচনা মানতে হবে। সমালোচনার বদলে আপনারা সাংবাদিককে আহত করবেন, সাংবাদিকদের গায়ে হাত তুলবেন, এটা চলবে না। এটার জন্য আমি আপনাদেরকে বলছি আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। একটা পত্রিকা দিয়ে। এই পত্রিকাটি দিয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ইনশাআল্লাহ লড়াই করে যাব।
সূত্র: যুগান্তর