প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ জাপার বিক্ষুব্ধ নেতারা এখন কী করবেন?

জাপার বিক্ষুব্ধ নেতারা এখন কী করবেন?

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) ‘ভরাডুবি’র পর দলটিতে আবারও বিভক্তি দেখা দিয়েছে। বিভক্ত নেতাদের একটি অংশ দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছেন—যার মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। পদত্যাগ করেননি দলের শীর্ষ দুই নেতা।

জাপার বিক্ষুব্ধ নেতারা এখন কি করবেন? জনমনে এমন প্রশ্নের উত্তর জানা গেছে। পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে আগামী ১৪ জানুয়ারি সারাদেশে নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলীয় প্রার্থীদের ঢাকায় ডেকেছেন তারা। সেই বৈঠক থেকে দলের পরবর্তী কাউন্সিল করা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানা গেছে।

জাপা সূত্রে জানা গেছে, জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি নির্বাচনে ‘ভরাডুবি’র পর অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে আছেন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত রওশন এরশাদ পন্থী নেতারা। এখন রওশন এরশাদ পন্থীদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থীরা। তার মধ্যে জাপার অনেক কেন্দ্রীয় নেতাও আছেন। তাই এখন জাপায় আরেক দফা ভাঙন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে নির্বাচনের দুদিন পর গত ১০ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে জাপার পরাজিত প্রার্থীরা ও বিক্ষুদ্ধ নেতা-কর্মীরা রাজধানীর বনানীতে দলের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে বাধা দেয় পুলিশ। তখন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে বিক্ষুদ্ধ নেতা-কর্মীরা। তাদের সঙ্গে এসে যোগ দেন ঢাকা-৪ আসন থেকে নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী দলের কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবুল হোসেন বাবলা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুর রহমান টেপা।

সেখান থেকে বাবলা ও টেপা দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করার আল্টিমেটাম দেন। একইসঙ্গে নির্বাচন কেন্দ্রিক আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তুলে তদন্ত কমিটি গঠনের কথাও জানান।

অপরদিকে বাবলা-টেপাদের দেওয়া আল্টিমেটামের মেয়াদ আজ ৪৮ ঘণ্টা পর (১২ জানুয়ারি) শেষ হয়েছে।

এখন কি করবেন? জানতে চাইলে সাইদুল রহমান টেপা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আল্টিমেটামের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখন তো আল্টিমেটামের মেয়াদ বাড়ানোর কিছু নেই। আবার গিয়ে তাদের পদ থেকে নামিয়েও দিতে পারি না। তাই আগামী ১৪ জানুয়ারি ঢাকায় আসছেন নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীরা। সেই দিন তাদের সঙ্গে বৈঠক করে দলের পরবর্তী কাউন্সিল ডাকতে চেয়ারম্যানকে আহ্বান জানাবো। তিনি যদি কাউন্সিল না ডাকেন তখন পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।

সারাদেশের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা এখন রওশন এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলে রওশন এরশাদ সম্মেলনের ডাক দিতে পারেন।

জাতীয় পার্টির বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি ৬ মাস আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুল রহমান টেপা।

ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, এমনিতে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৬ মাস আগে। ফলে দলের কাউন্সিল করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পরবর্তী কাউন্সিলে সারাদেশে নেতাকর্মীরা যদি চায় তারা (জিএম কাদের-চুন্নু) আবার থাকবেন, না হলে থাকবেন না।

দলের চেয়ারম্যান কাউন্সিল না ডাকলে কী করবেন; জানতে চাইলে টেপা বলেন, কি আর করবো? আমাদের ভালো না লাগলে বের হয়ে যাবে।

অপরদিকে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ-পন্থী নেতারা বলছেন, দ্বাদশ সংসদে আওয়ামী লীগের ২৬ আসনে সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশ নেয় জাতীয় পার্টি। কিন্তু সেই সমঝোতার ২৬ আসনে ছিলো জাপার কো-চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বাবলা ও দলের প্রভাবশীল প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের আসন।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে নির্বাচনের আগেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন ফিরোজ রশীদ। আর আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচন করে পরাজিত হন বাবলা। সমঝোতায় আসনেও মাত্র ১১টিতে জয় পায় জাপার প্রার্থীরা। যার কারণে ১৫ আসনের পরাজিত প্রার্থীরাও জিএম কাদেরের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন। এছাড়া আসন সমঝোতার বাইরে সারাদেশে ২২৫ এর অধিক আসনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আর্থিক সুবিধা দেননি জিএম কাদের-চুন্নুরা। এই কারণে এসব প্রার্থীদের অনেকে নির্বাচনের আগে সরে দাঁড়িয়েছেন। আবার অনেকে মাঠে থাকলেও নির্বাচনে নিষ্ক্রিয় থাকেন।

সারাদেশের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা এখন রওশন এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলে রওশন এরশাদ সম্মেলনের ডাক দিতে পারেন।

জানতে চাইলে রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মহসী ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাতীয় পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে। নেতাকর্মীরাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তারা দলের কাউন্সিল চাচ্ছেন।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।