
দেশের তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে এবার মিথ্যাচারের অভিযোগ এনেছেন সিনেমা নির্মাতা রাজিবুল হোসেন। তার অভিযোগ, এক যুগ আগে তার নির্মিত ‘সব কিছু পেছন ফেলে’ নামের সিনেমায় অতিথি চরিত্রে অভিনয় করলেও পরবর্তীতে তা অস্বীকার করেন সাকিব। যে কারণে সিনেমাটি শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।
শহরের পাঁচ তরুণ-তরুণীর গল্প নিয়ে নির্মিত এ সিনেমায় অতিথি চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল সাকিবের। কক্সবাজারে শুটিংয়ে অংশও নিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে সংবাদ প্রকাশ হলে অভিনয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন সাকিব। আর এতে বিপদে পড়েন পরিচালক, থেমে যায় শুটিং। শেষ পর্যন্ত সিনেমার কাজই বন্ধ করে দেন নির্মাতা।
যা নিয়ে বৃহস্পতিবার নির্মাতা সাকিবের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ এনেছেন। নির্মাতা রাজিবুল হোসেন বলেন, ‘এই সিনেমার শুটিং শুরু হয়েছিল অনেক স্বপ্ন নিয়ে। সাকিব আল হাসান শুটিং করেছেন, ক্যামেরার সামনে অভিনয় করেছেন, ক্ল্যাপস্টিক ও প্রফেশনাল রেকর্ডিংয়ের মধ্য দিয়ে আমরা দৃশ্য ধারণ সম্পন্ন করি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তিনি সিনেমায় অভিনয় করার বিষয়টি অস্বীকার করলে পুরো প্রজেক্টটা অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।’
নির্মাতা আরও বলেন, ‘সাকিব আল হাসানের মিথ্যাচার নির্মাতা হিসেবে আমাকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তেমনি এটা ছিল একটি শিল্পভিত্তিক কাজের প্রতি তার অসম্মান। আমি চাইলে তাকে ছাড়া সিনেমাটি শেষ করতে পারতাম, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি একটি অসম্পূর্ণ সত্য দিয়ে পূর্ণ সিনেমা নির্মাণ করা যায় না।’
পরিচালনার পাশাপাশি সিনেমার প্রযোজকও ছিলেন রাজিবুল হোসেন। স্পনসর করেছিল ফুজিফিল্ম বাংলাদেশ। তাদের মাধ্যমেই সাকিব এই সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হন বলে জানান নির্মাতা। রাজিবুল হোসেন বলেন, ‘সাকিব আল হাসান তখন ফুজিফিল্মের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ছিলেন। ফুজির সঙ্গে সাকিবের চুক্তি ছিল বছরের সুবিধা অনুযায়ী ৮ দিন তিনি তাদের সময় দেবে। সিনেমা নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে ফুজিফিল্মস আমাদের জানায়, সিনেমার জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেবে তারা, সেই সঙ্গে সাকিব আল হাসান অভিনয় করবেন সিনেমায়।’
শুটিংয়ে অংশ নেওয়ার পরেও সাকিব আল হাসান কেন অস্বীকার করেন জানতে চাইলে নির্মাতা বলেন, ‘প্রথম লটেই আমরা তাকে নিয়ে শুটিং করি। এরপর তার অভিনয় নিয়ে একটা সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর তিনি বেকে বসেন। কী কারণে তিনি এমনটা করেছেন তা আমার জানা নেই। ফুজিফিল্ম তখন সাকিব আল হাসানের সঙ্গে বিরোধে না গিয়ে তাকে বাদ দিয়ে সিনেমা শেষ করার অনুরোধ জানায়। কিন্তু ততদিনে তার অভিনয়ের খবরটি ছড়িয়ে গেছে। পরে নৈতিক কারণেই আমি সিনেমার কাজ বন্ধ করে দিই। আমার ৬৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।’
এত দিন পর কেন এই অভিযোগ—এমন প্রশ্নের উত্তরে রাজিবুল হোসেন বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে সাকিব আল হাসান কাজটি সে সময় ঠিক করেননি। এটা সবাইকে জানানোর জন্যই এ বিষয় নিয়ে কথা বলা। এ ছাড়া অনেকেই সিনেমা বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে নানা কথা বলত। তাদের সত্যিটা জানানো দরকার। কোনো প্রোডাকশন বা পরিচালনাগত দুর্বলতায় নয়, বরং অবাঞ্ছিত ও অনৈতিক একটি ঘটনার কারণে অসমাপ্ত থেকে গেছে সব কিছু পেছন ফেলে সিনেমাটি।’