প্রচ্ছদ সারাদেশ কোচিংয়ে প্রেম, পালিয়ে বিয়ের পর ইভার করুণ পরিণতি

কোচিংয়ে প্রেম, পালিয়ে বিয়ের পর ইভার করুণ পরিণতি

কোচিং করতে গিয়ে সহপাঠীর সঙ্গে পরিচয়, এরপর প্রেমের সম্পর্ক। বয়স কম হওয়া পরিবারের লোকজন বিয়ে দিতে রাজি হয়নি। এরপর কিছু দিন পলিয়ে ছিল দুজন। পরে রেজিস্ট্রি ছাড়াই বিয়ে হয় তাদের। গত রোববার (২৩ নভেম্বর) ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ইভা খাতুনের (১৭) মরদেহ।

তার স্বামীর নাম মো. কায়েস হোসেন (১৭)। ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের বাজেকলা গ্রামে। কায়েস ওই গ্রামের প্রবাসী রফিকুল ইসলামের ছেলে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, ঘটনার দিন বেলা ১১টার দিকে পাশের বাড়ির এক নারী মাংস দিতে তাদের বাড়িতে ঢুকলে ইভাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখেন। পরে মরদেহ নামিয়ে পুলিশকে খবর দেয়া হয়।

জানা যায়, কায়েস বাগমারার কাতিলা সবুজ সংঘ স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত বছর পার্শ্ববর্তী দুর্গাপুর উপজেলার সূর্যভাগ এলাকার একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়। এখানে তার নিকট আত্মীয় বাড়িতে থাকতো সে। একই কোচিংয়ে স্থানীয় বেলঘড়িয়া স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ইভা খাতুন পড়তো। সেখানেই তাদের পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুজনেরই বয়স কম এবং একই ক্লাসে পড়াশোনা করায় পরিবার থেকে তাদের বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। গত ১৫ দিন আগে তারা কায়েসের বাজেকলার বড়িতে আসে। কিন্তু কায়েসের পরিবার তাদের মেনে নেয়নি।

প্রতিবেশীরা জানান, বাড়িতে আসার পর থেকেই কায়েসের মা তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে। রবিবার ইভা এবং কায়েসকে বাড়িতে কিছু খেতে দেয়া হয়নি।

ইভার বাবা দুর্গাপুর উপজেলার আলিপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. আবুল হোসেন বলেন, এতদিন মেয়ে এবং জামাই তার বাড়িতেই থাকতো। গত কয়েকদিন আগে তারা কায়েসের বাড়িতে আসে। আজ এই ঘটনা ঘটে গেল বলে সে কান্নায় ভেঙে পড়ে। অভিযোগ করেন ছেলের বাড়ির অবহেলায় তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় মেম্বার সিদ্দিক আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ইভা নামের মেয়েটিকে মৃত অবস্থায় দেখি। শুনেছি তারা প্রেম করে বিয়ে করেছে। এটা তার পরিবার থেকে মেনে নিতে চায়নি।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই সোহেল রানা বলেন, প্রাথমিক সুরতাল রিপোর্টে গলায় একটি দাগ পাওয়া যায়। তবে শরীরের অন্য কোনো অঙ্গে দাগ বা অন্যকিছু পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনাটি অবশ্যই সন্দেহজনক।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে রেখেই আমরা মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। রিপোর্ট পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। এ বিষয়ে নিহতের বাবা আবুল হোসেনের উপস্থিতিতে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে। ২০২৫ সালে ইভা এবং কায়েস দুজনেই এসএসসি পরীক্ষা দিলেও ইভা পাস করে এবং কায়েস অকৃতকার্য হয়।

সূত্র : চ্যানেল২৪