প্রচ্ছদ অপরাধ ও বিচার এক নারীকে স্ত্রী দাবি করে দুই পুরুষের টানাটানি-হাতাহাতি, এরপর যা ঘটল

এক নারীকে স্ত্রী দাবি করে দুই পুরুষের টানাটানি-হাতাহাতি, এরপর যা ঘটল

যশোর শহরের চারখাম্বার মোড়ে এক নারীকে নিজের স্ত্রী দাবি করে টানাটানি শুরু করেন চল্লিশোর্ধ্ব দুই ব্যক্তি। একপর্যায়ে শুরু হয় তাদের মধ্যে হাতাহাতি। তাদের দু’জনের টানাটানি ও হাতাহাতি দেখতে ভিড় জমে উৎসুক মানুষের।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ ঘটনার পর স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তিনজনকেই নিয়ে যান থানায়। আর সেখানেই শুরু হয় চরম উত্তেজনা। থানা চত্বরেও তারা কয়েক দফা টানাটানি-হাতাহাতিতে লিপ্ত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ তিনজনকে আটক করে। পরে মহিলাকে থানা থেকে নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয় আর পুরুষ দু’জনকে ফৌজদারি দন্ডবিধির ১৫১ ধারায় (নিরাপদ হেফাজত) আটক দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। বিচারক স্বামী দাবিদার দুই পুরুষকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কারাগারে যাওয়া দুই পুরুষ হলেন- ফরিদপুর কানাইপুরের বিকাশ অধিকারী ও সদরের পলাশ কুন্ডু। এছাড়া, স্ত্রী হিসেবে দাবি করা নারী সীমা অধিকারীও ফরিদপুর সদরের বাসিন্দা।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিকাশ অধিকারী ও সীমা অধিকারীর প্রায় ৩৬ বছরের সংসার। এই সংসারে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। সম্প্রতি সীমা অধিকারী ফরিদপুর সদরের বাসিন্দা পলাশ কুন্ডুর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এরপর বিকাশ অধিকারীর ঘর ছেড়ে পালিয়ে পলাশের হাত ধরে তিনি ভারতে চলে যান এবং সেখানে তারা বিয়েও করেন। এরপর সোমবার রাতে তারা যশোরে এসে একটি হোটেলে ওঠেন। বিষয়টি জানতে পেরে বিকাশের সন্দেহ হয় এবং তিনি সেই হোটেলে যান। এরপরই ত্রিমুখী এই ঝামেলা গড়ায় থানা পর্যন্ত।

এ বিষয়ে দ্বিতীয় স্বামী পলাশ কুন্ডু জানান, সীমার সঙ্গে তার তিন বছরের সম্পর্ক। তারা দুজনেই স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন এবং এখন একসঙ্গে থাকতে চান।

সীমা অধিকারী জানান, বিকাশের সংসারে তিনি নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতেন। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তিনি বাধ্য হয়ে বিকাশকে ছেড়ে পলাশকে বিয়ে করেছেন। তিনি আর বিকাশের সঙ্গে সংসার করবেন না।

প্রথম স্বামী বিকাশ অধিকারী দাবি করেন, সীমার পরকীয়ায় কারণে তাদের সাজানো সংসার ভেঙে যাচ্ছে। সীমা শুধু বাড়ি ছেড়ে পালানোর সময় নগদ টাকা ও গয়না নিয়ে গেছেন। তিনি সীমাকে যেকোনো মূল্যে বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে চান।

এই বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) কাজী বাবুল জানান, ৯৯৯-এ কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের তিনজনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। থানায় দীর্ঘক্ষণ তাদের সঙ্গে কথা বলেও কোন সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। পরে ১৫১ ধারায় তাদের আটক দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে।