জাতীয়: সোমালি জলদস্যুদের থেকে গত ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় জলদস্যুমুক্ত হয় এমভি আবদুল্লাহ। সোমবার (২২ এপ্রিল) দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে বাংলাদেশি জাহাজটির নোঙর করার কথা থাকলেও গতি বাড়ায় সেটি একদিন আগে রোববার নোঙর করবে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) কেএসআরএমের ডিএমডি শাহরিয়ার জাহান রাহাত এ তথ্য জানান। তিনি জানান, জাহাজটি ২২ এপ্রিল দুবাইয়ে নোঙর ফেলার কথা থাকলেও তা এখন এক দিন এগিয়ে যাচ্ছে। ২১ এপ্রিল এটি নোঙর করবে সেখানে।
১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় জলদস্যুমুক্ত হয় জাহাজটি। এর পর আরব আমিরাতের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন নাবিকরা। শুক্রবার বিকেল ৫টায় জাহাজটি সোমালিয়া উপকূল থেকে ৬৮৭ নটিক্যাল মাইল এবং দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দর থকে ৯৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিল। এটি নিরাপদ জোন হিসেবে পরিচিত। এ জন্য দুশ্চিন্তাও কিছুটা কমেছে নাবিকদের। ফুরফুরে মেজাজে থাকার কিছু ছবিও পাঠিয়েছেন তারা।
জাহাজটি নোঙর করলে এতে থাকা নাবিকদের দেশে ফেরার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে বলে জানিয়েছে মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ।
কেএসআরএমের সিইও মেহেরুল করিম বলেন, দুজন নাবিক দুবাই থেকে বিমানে দেশে ফিরতে চান। বাকি ২১ জন জাহাজে করেই দেশে ফিরবেন। ওই দুজন কখন, কীভাবে দেশে ফিরবেন, সেটা আমরা জাহাজ নোঙর করার পর ঠিক করব। যিনি যেভাবে আসতে চান, তাকে সেভাবেই দেশে আনব।
জানা গেছে, জাহাজের কর্ম হতে নাবিকরা কে কোন জায়গাই অব্যাহতি (সাইন অফ) করবেন জলদস্যুদের কবল থেকে জাহাজটি মুক্ত হওয়ার আগেই তার তালিকা চূড়ান্ত করে রেখেছে কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ। এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেনকে একটি তালিকাও দিয়েছিলেন নাবিকরা। এতে ২৩ জন নাবিকের মধ্যে ১৮ জন আরব আমিরাতের বন্দর ও ৫ জন চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছালে সাইন অফ করবেন। তবে বর্তমানে ২১ নাবিক এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে করে দেশে ফিরতে চান।
এদিকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকায় জেনারেল স্টুয়ার্ড মোহাম্মদ নূর উদ্দিন ও সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরী বিমানে দুবাই থেকে দেশে ফিরতে চান।
স্টুয়ার্ড মোহাম্মদ নূর উদ্দিনের স্ত্রী জানান, শারীরিকভাবে কোনো অসুস্থতা নেই আমার স্বামীর। তবে মানসিকভাবে সে খুব বিপর্যস্ত। আমাকে বারবার বলছেন, তার কিছু ভালো লাগছে না। খাওয়া-দাওয়াও ঠিকমতো করতে পারছেন না। ফিরে এলে তাঁকে মনোচিকিৎসক দেখাব।
নূর উদ্দিনের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস জানিয়েছেন, দেশে ফেরার পর আমার স্বামী দু-তিন মাস বিশ্রামে থাকবেন। আবার কবে নূর উদ্দিন জাহাজে উঠবেন, সেই সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সময়ে নেবেন। সুস্থ থাকলে অনেক কিছু করা যাবে। কিন্তু মানসিকভাবে তিনি যদি সুস্থ না থাকেন, তাহলে তো বিকল্প ভাবতে হবে আমাদের।
সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মোজাহেদুল ইসলামের মা ফেরদৌস আক্তার বলেন, ছেলের সঙ্গে এখন প্রতিদিনই কথা হয়। আগের চেয়ে এখন অনেক ভালো আছে তারা। আমাদেরও দুশ্চিন্তা কমেছে। তবে টেনশন থেকে পুরোপুরি মুক্ত হতে পারিনি। ছেলে বলছে, তার মানসিক অবস্থা ভালো নেই; দ্রুত দেশে ফিরতে চায়। জাহাজে করে দেশে ফিরতে আরও সাত-আট দিন দেরি হবে। তাই দুবাই থেকে বিমানে দেশে ফিরবে বলে জানিয়েছে। তবে কবে কোথায় আসবে, তা এখনও জানে না সে। এটা জাহাজের মালিকপক্ষ ঠিক করবে।
প্রসঙ্গত, ভারত মহাসাগরে গত ১২ মার্চ সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ ও এর ২৩ জন নাবিক। এরপর জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে মালিকপক্ষ ও সরকার বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালাতে থাকে। অবশেষে ৩১ দিন পর ১৩ এপ্রিল রাতে মুক্তি পায় জাহাজ ও নাকিকরা।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |