প্রচ্ছদ জাতীয় আমি চাইলে আমেরিকার স্টাইলে পুলিশ দিয়ে আন্দোলন থামিয়ে দিতে পারি: প্রধানমন্ত্রী

আমি চাইলে আমেরিকার স্টাইলে পুলিশ দিয়ে আন্দোলন থামিয়ে দিতে পারি: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়: দেশের বামপন্থি রাজনীতিবিদরা ৯০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অতি বামদের কাছে আমার প্রশ্ন, তারা আমাকে উৎখাত করে কাকে ক্ষমতায় আনবে? তারা কি একবার এটা ভেবে দেখেছে? আর আমার অপরাধটা কী? শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এখানে আন্দোলন করছে। আমি বলে দিয়েছি, তারা আন্দোলন করছে, করুক। অথচ আমি চাইলে আমেরিকার স্টাইলে পুলিশ দিয়ে আন্দোলন থামিয়ে দিতে পারি।

বৃহস্পতিবার তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাম্প্রতিক থাইল্যান্ড সফরের ফলাফল বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি দুইজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, এ ব্যাপারে আপনি প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে এর বিচার দাবির কোনো উদ্যোগ নেবেন কি না? দুদিন আগে আপনি বলেছেন, অতি বাম-অতি ডান মিলে সরকারের বিরুদ্ধে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে। আপনি জাতীয়-আন্তর্জাতিকভাবে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, বাংলাদেশের মানুষ তখন শঙ্কিত; সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষের কাছে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আপনার বার্তা কী? হিট স্ট্রোকে সারা বাংলাদেশ আক্রান্ত। এটাকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করলে যাদের মৃত্যু হয়েছে তারা এক ধরনের সরকারি সুবিধা পায়। এ বিষয়ে আপনার ভাবনা কী, গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গরম পড়াটা কিন্তু খুব নতুন কিছু না। এর আগেও কিন্তু এই হিট স্ট্রোক হয়েছে এবং সব সময় হয়। তবে সাধারণত বৈশাখ মাসে কালবৈশাখী হতো, এবার কালবৈশাখীটা পিছিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, আমাদের দলের পক্ষ থেকে, সহযোগী সংগঠন থেকে শুরু করে সকলে পানি বিতরণ করা, মানুষকে নানা রকমের সহযোগিতা দেয়া, আমরা কিন্তু সেটা দিয়ে যাচ্ছি।

বাম ৯০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সব সময় মনে করি, অতি বাম খুব প্রোগ্রেসিভ দল, তারা খুবই গণমুখী দল। আমার প্রশ্নটা হচ্ছে, ঠিক আছে তারা আমাকে উৎখাত করবে। পরবর্তীতে কে আসবে তাহলে, সেটা কি ঠিক করতে পরেছে? সেটা আমার প্রশ্ন, কারা আসবে? কে আসবে? কে দেশের জন্য কাজ করবে? কাকে তারা আনতে চায়? সেটা কিন্তু স্পষ্ট না।

তিনি বলেন, ‘আন্দোলন করে যাচ্ছে কেউ ফিউগেটিভ হয়ে বিদেশে বসে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, সেই ডিজিটাল বাংলাদেশের বদৌলতে প্রতিদিন অনলাইনে আন্দোলন-সংগ্রাম করেই যাচ্ছে। নির্দেশ দিয়েই যাচ্ছে। সেখানেও প্রশ্ন আছে। যারা আন্দোলন করার করুন, আমরা তো বাধা দিচ্ছি না!

‘অবশ্য আমার মনে হয়, আমাদের একটু নতুন পথ নিয়ে নেয়ার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আমরা যদি আমাদের পুলিশকে বলে দেই, আমেরিকার পুলিশ যেভাবে আন্দোলন থামায়, সেটা অনুসরণ করতে পারে। সেটা করতে পারি। কারণ আমরা তো ধৈর্য ধরতে বলেছিলাম। সেই ২৮ অক্টোবর ২০২৩ সালে আমি তো পুলিশকে বলেছিলাম ধৈর্য ধরতে। ধৈর্য ধরতে গিয়ে তাদের পিটিয়ে মেরেছে। সেই সঙ্গে তাদের হাসপাতালে আক্রমণ, গাড়ি পোড়ানো। কাজেই আমার মনে হয়, এখন আমাদের পুলিশ কিন্তু আমেরিকান স্টাইলে আন্দোলন দমানোর ব্যবস্থাটা নিতে পারে। আমার মনে হয়, সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে আমাকে সমর্থন করবেন।’

বাংলাদেশি হত্যার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘প্রতিবাদ শুধু এখানেই না, আমেরিকায় বসেও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন স্কুল, বিভিন্ন শপিং মল, রেস্টুরেন্টে অনবরত গুলি হচ্ছে আর মানুষ মারা যাচ্ছে। এমন কোনো দিন নাই বোধ হয়, আমেরিকায় মানুষ না মারছে। তাদের সেদিকে নজর দেয়া উচিত। তাদের দেশে এই যে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। গুলি করে একেবারে সাধারণ নিরীহ মানুষগুলোকে হত্যা করা হচ্ছে। এটাও তো তাদের দেখা উচিত। নিজের ঘর আগে সামলানো উচিত। এটা প্রতি নিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন করা।

এর আগেও আমাদের বাংলাদেশি কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রতিবাদ করেছি এবং বিচার করে তারা আমাকে জানিয়েছে। আমাদের যেটুকু করার সেটা আমরা করে যাচ্ছি,’ যোগ করেন তিনি।

থাইল্যান্ডে ছয় দিনের সরকারি সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী ২৯শে এপ্রিল ব্যাংকক থেকে দেশে ফিরেছেন। সফরকালে শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসে (থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) থাই প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে দুই নেতার উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে ভিসা অব্যাহতি, জ্বালানি সহযোগিতা, পর্যটন ও শুল্ক সংক্রান্ত বিষয় এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) আলোচনার বিষয়ে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি সই হয়।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।