বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কোটা সংস্কার থেকে সরকার পতনের একদফা আন্দোলন ক্যাম্পাস আর নোয়াখালীর রাজপথে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের গণিত বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী ও নোবিপ্রবির অন্যতম সমন্বয়ক জাহিদুল ইসলাম হাসান (জাহিদ)।
জাহিদের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়া থানার পরানপুরে। স্বৈরাচারী হাসিনার পতনের পর জাহিদ লেগে পড়েন রাষ্ট্র সংস্কার কাজে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়িঘরের নিরাপত্তা, বাজার মনিটরসহ বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয়ে পড়েন। এ সময় তার বাড়ি থেকে বারবার বাড়িতে যেতে বলা হলেও যাবে যাবে বলে আর যাওয়া হয়নি।
একপর্যায়ে তার বাবা আব্দুল জাব্বার মিয়াজি অসুস্থ হয়ে গত ২২ আগস্ট মারা যান। এ নিয়ে শনিবার (২৩ আগস্ট) রাতে জাহিদুল ইসলাম তার বাবাকে নিয়ে নিজের ফেসবুকে এক হৃদয়বিদারক আবেগঘন পোস্ট করেন, যা নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীসহ নোয়াখালীর হাজারো ছাত্র-জনতাকে কাঁদিয়েছে। পাঠকদের জন্য তার পোস্টটি হুবহুব তুলে ধরা হলো— ‘অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে আমাদের দুই ভাইয়ের চোখের সামনে আমার বাবার মৃত্যু দেখলাম। একজন ছেলের জন্য এর চাইতে কষ্টের কিছু আছে কি না, আমার জানা নাই।
এই দৃশ্য দেখার জন্য আমি কখনোই প্রস্তুত ছিলাম না। কতটা অসহায়ের মতো তাকায়া ছিলাম আমি। আমার আব্বার জন্য আমি কিছুই করতে পারলাম না। আমার চোখের সামনে আমার আব্বার চোখের আলো নিভে গেল। ৫ আগস্টের পর ভার্সিটির আন্দোলনসহ নোয়াখালীর স্থানীয় কিছু সমস্যায় আমি বাড়ি যাইতে পারি নাই। আব্বার সাথে যখনি কথা হইত, আব্বা আমাকে প্রত্যেকবার বাড়ি যাওয়ার কথা বলতো। আমি বারবার মিথ্যা আশ্বাস দিতাম। যাব যাব বলে কখনোই আর যেতে পারি নাই। আব্বা আমার জন্য ফ্রিজে কাঁঠাল রেখে দিছিল। আমার সাথে একসাথে খাবে। আমার আব্বা আমাকে কোনোদিন কোনোকিছুতে কষ্ট দেয় নাই। আমি আমার আব্বাকে অনেক কষ্ট দিছি।
আমি আমার আব্বার সাথে শেষবারের মতো কথা বলতে পারলাম না, আমার আব্বা আমাকে শেষবারের মতো দেখতে পারলো না; এই যন্ত্রণা আমি কীভাবে বয়ে যাব সারাজীবন। আমি আর কখনো আন্দোলনে যাব না, আপনি শুধু একবার আমারে হাছান বইলা ডাক দেন। আমারে একবারের জন্য বুকে জড়িয়ে নেন। পৃথিবীর সবকিছুর বিনিময়ে আমি একবারের জন্য আপনার মুখ থেকে হাছান ডাকটা শুনতে চাই।
সুূুত্রঃ কালবেলা
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |