প্রচ্ছদ সারাদেশ আমার বুক ভরা আশা ভেঙেচুরে তছনছ হয়ে গেছে

আমার বুক ভরা আশা ভেঙেচুরে তছনছ হয়ে গেছে

সারাদেশ: রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১১ মার্চ) রাত ১০টার দিকে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।

বৃষ্টির বাড়ির ভেতর স্বজন ও প্রতিবেশীদের ভিড় থাকলেও কেমন একটা নিস্তব্ধতা বিরাজ করছিল। ঘরের ভেতর থেকে মাঝেমধ্যে বিলাপের সুর ভেসে আসছিল। ঘরের ভেতর গিয়ে দেখা যায়, বারবার মেয়ের নাম ধরে চিৎকার করছেন মা বিউটি বেগম।

বিলাপ করতে করতে বিউটি বেগম বলেন, ‘নিজের সন্তান নিজের কাছে নিয়ে আসছি শান্তি তো লাগবেই। আমার যে বুক ভরা আশা, তা যে ভেঙেচুরে তছনছ হয়ে গেছে।’

একদিকে মেয়েকে হারানোর কষ্ট অন্যদিকে লাশ ফেরত পাওয়া নিয়ে জটিলতায় বাবা সবুজ শেখকে যেন পাথর করে দিয়েছে। আদরের বড় মেয়েকে বড় ভাইয়ের কবরের পাশে নিজ হাতে সমাহিত করার একটি দিন এখনো পার হয়নি।

বৃষ্টির বাবা বলেন, ‘যারা ষড়যন্ত্র করে মেয়ের লাশ আটকে রেখেছিল তাদের কাছে কোনো প্রমাণ ছিল না। আমাকে ১১ দিন হয়রানি করা হয়েছে। ১১ দিন কেন, ১১ বছর লাগলেও আমার মেয়ের লাশ আমি ফিরিয়ে আনতাম। সব তথ্য প্রমাণ দিয়েই আইনের মাধ্যমে আমি মেয়ের লাশ ফিরিয়ে এনেছি। মেয়ের লাশ নিতে যারা বাধা সৃষ্টি করেছিল, আল্লাহ তাদের বিচার করবেন।’

সোমবার (১১ মার্চ) রাত ৮টা ২০ মিনিটে বৃষ্টি খাতুনের মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি তার গ্রামের বাড়ি পৌঁছায়। এ সময় বৃষ্টির মরদেহ অপেক্ষায় থাকা শোকার্ত স্বজন ও গ্রামের মানুষের ঢল নামে। বৃষ্টির লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে শোকার্তদের মাতম করতে দেখা যায়। রাত পৌনে ১০টার দিকে বনগ্রাম পশ্চিম পাড়ার জামে মসজিদের মাইকে বৃষ্টির জানাজার ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর নিজের বাড়ির আঙ্গিনায় তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। কয়েক’শ মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেন। জানাজার পরে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বৃষ্টিকে কবরে সমাহিত করা হয়।

বৃষ্টি খাতুন ঢাকায় সাংবাদিকতা করতেন। তিনি সেখানে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচিত ছিলেন। তবে তার জাতীয় পরিচয়পত্রে বৃষ্টি খাতুন নাম রয়েছে। তার বাবার নাম সবুজ শেখ ও মা বিউটি খাতুন। তিন বোনের মধ্যে বৃষ্টি ছিলেন সবার বড়।

উল্লেখ্য, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি ভবনের একটি রেস্তোরাঁয় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ওই আগুনের ঘটনায় শিশুসহ ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।