প্রচ্ছদ হেড লাইন আমার আবিরকে এনে দাও, তার মুখখানা দেখে মরতে চাই’

আমার আবিরকে এনে দাও, তার মুখখানা দেখে মরতে চাই’

বিষাদ: আবিরের ছবি বুকে জড়িয়ে কাঁদছে মা আঞ্জুয়ারা বেগম। এ কান্না যেন থামবার নয়। থামছেই না কিছুতেই। উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে গিয়ে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হওয়া আবির হোসেনের মায়ের আহাজারি আকাশ বাতাসকে কেবল ভারি করেই তুলছে। সন্তানের মুখ শেষবারের মতো দেখতে অপেক্ষায় রয়েছেন মা আঞ্জুয়ারা। কোনো প্রকার হয়রানি ছাড়াই অতি দ্রুত যুক্তরাষ্ট্র থেকে মরদেহ দেশে ফেরত চান স্বজনেরা।

সাতক্ষীরা কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নের ঝাঁপাঘাট শেখপাড়া গ্রামে আবির হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আবিরের মা আঞ্জুয়ারা বেগম ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে অঝোরে কাঁদছেন। বিলাপের সুরে তিনি বলছেন, ‘আমার আবিরকে এনে দাও। আমি তার মুখখানা দেখে মরতে চাই।’ পাশে আবিরের ভাই-বোন ও প্রতিবেশীরা মলিন মুখে বসে রয়েছেন। প্রতিবেশীদের মধ্যে অনেকের চোখ মুছতে দেখা গেছে পরম গোপনে।

আঞ্জুয়ারা বেগমের পাশে আবিরের স্বজনেরা। নিহত আবির হোসেন (৩৮) সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের ঝাঁপাঘাট শেখপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছোট ছেলে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। আমেরিকাতে পড়াশোনার পাশাপাশি একটি আইফোন সেলস সেন্টার ওক্রিস ফুড মার্ট’ নামের একটি কফি শপে পার্টটাইম চাকরি করতেন।

কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ-ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ সময় শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে আবির হোসেনের কফি শপে টাকা ও মালামাল লুট করার উদ্দেশ্যে একদল সন্ত্রাসী প্রবেশ করে। সন্ত্রাসীদের বাধা দিয়ে মালিকের কাছে ফোন করার চেষ্টা করছিলেন আবির। এ সময় ডাকাতদের একজন তাকে গুলি করে পালিয়ে যায় তারা। গুলিবিদ্ধ আবির হোসেন সেখানেই মারা যান। আবিরের মরদেহ দেশে নিয়ে আসার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

প্রতিবেশী শেখ মনিরুল ইসলাম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত এক আত্মীয়ের মাধ্যমে আবিরের মৃত্যুর ঘটনা জেনেছেন তারা। মৃতদেহটি অতি দ্রুত ফিরে পেলে তার নিজ বাড়ি কলারোয়ার ঝাঁপাঘাট গ্রামের শেখপাড়ায় দাফন করা হবে।

আবিরের বড় বোন আয়েশা খাতুন বলেন, আবির হোসেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে গ্র্যাজুয়েট গবেষণা সহকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের লামার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। সেখানে স্ত্রী ও তিন বছরের কন্যাসন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। সরকারের কাছে তিনি আবিরের মা, স্ত্রী ও তিন বছরের শিশুসন্তানের দেখাশোনার জন্য ক্ষতিপূরণ এবং ভাই হত্যার অতি দ্রুত বিচার দাবি জানান।

আবিরের মেজো ভাই জাকির হোসেন বলেন, অন্য দেশের আইন ও বিচার বিভাগের প্রতি নাক গলায় আমেরিকা। সেই আমেরিকার মতো একটা দেশে পড়তে যাওয়া আমার ভাইকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছে। সেখানকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হত্যায় জড়িত থাকা সন্দেহে দুজনকে আটক করে একজনকে ছেড়ে দিয়েছে।’

কোনো হয়রানি ছাড়াই আবিরের মরদেহ অতি দ্রুত ফেরত এবং আবির হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের শাস্তির দাবি জানান তিনি ও তার পরিবার।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।