প্রচ্ছদ সারাদেশ আজকে আমার কবর হয়ে যেতো, আমি এর বিচার চাই

আজকে আমার কবর হয়ে যেতো, আমি এর বিচার চাই

সারাদেশ: সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বাদীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে আসামিদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি লিখিতভাবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিকে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে হামলার ঘটনায় শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী।

মারধরের শিকার ব্যবসায়ীর অভিযোগ, চেক জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাৎ মামলায় আগাম জামিন নিতে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে আসেন গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত দুই আসামি আসাদুল ইসলাম ও আমির হোসেন। ওই সময় তিনি ব্যক্তিগত কাজে আদালতে আসলে, তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় আসামি ও তার সমর্থকরা। পরে তিনি প্রাণভয়ে আইনজীবী খুরশিদ আলম খানের কাছে আশ্রয় নেন।

হামলার শিকার আমিনুল ইসলাম ‘ভাই ভাই ট্রেডার্সের’ স্বত্বাধিকারী। আসামিরা একসময় তার ব্যবসায়িক সহযোগী ছিলেন। রোববার (৩ মার্চ) আদালত প্রাঙ্গণে কেঁদে কেঁদে তিনি বলেন, আদালত প্রাঙ্গণে তারা আমার ওপর কীভাবে হামলা চালালো। আজ আমি লাশ হয়ে গেলে আমার ফ্যামিলি কান্নায় ভেঙে পড়তো, কোথায় গিয়ে দাঁড়াত তারা। আজকে আমার কবর হয়ে যেতো, আমি এর বিচার চাই। মহামান্য বিচারপতি, আইনমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি বিচার চাই।

বাদীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, ‘মেসার্স ভাই ভাই ট্রেডার্সের কর্ণধার আমিনুল ইসলাম একজন পাথর ব্যবসায়ী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সরকারের বেশকিছু মেগা প্রকল্পে পাথর সরবরাহ করে আসছেন। আর আসাদুল ইসলাম ও আমির হোসাইন দুজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। ২০১৮ সালের জুন মাসে তিনজন যৌথভাবে বিদেশ থেকে পাথর আমদানির ব্যবসা শুরু করেন। চুক্তি অনুযায়ী কে কতটুকু লভ্যাংশ পাবেন সেটাও লিখিতভাবে করা হয়। ব্যবসা শুরু করতে ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম প্রথমে ১২ কোটি তিন লাখ এবং পরবর্তীতে আরও দুই কোটি টাকা পৃথক দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেন। এ সময় আরও সাতটি চেকের পাতা তার কাছ থেকে নেয়া হয়। দীর্ঘদিন পাথর আমদানি না করা হলে আমিনুল ইসলাম তাদের কাছে টাকা ও চেক ফেরত চান।

কিন্তু অ্যাসরোটেক্স গ্রুপের ওই দুই কর্মকর্তা তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে তাদের আচরণে সন্দেহ হলে আমিনুল ইসলাম ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, যৌথ অ্যাকাউন্ট হলেও তার অজান্তেই ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম দীর্ঘদিন তাদের কাছে ধরনা দিলেও টাকা ফেরত পাননি। সবশেষ তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডিকে। দীর্ঘ তদন্তের পর গত বছরের শেষদিকে সিআইডি প্রতিবেদন দাখিল করে।

এরপর গত বছরের শেষদিকে মামলার তদন্ত শেষে ‘অ্যাসরোটেক্স গ্রুপে’র এমডি ও পরিচালকের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় সিআইডি। তাতে বলা হয়, পাথর আমদানির ব্যবসায়িক পার্টনার হয়ে ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম দুই দফায় প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে অ্যাসরোটেক্স গ্রুপের অ্যাকাউন্টে জমা দেন। যা যৌথ অ্যাকাউন্ট হলেও প্রতিষ্ঠানের এমডি ও পরিচালক জালিয়াতির মাধ্যমে টাকাগুলো তুলে আত্মসাৎ করেন, সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের তদন্তে এমন প্রমাণ মিলেছে।

ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন প্রজেক্টে পাথর সাপ্লাই দিয়ে আসছিলাম। অ্যাসরোটেক্স গ্রুপের এমডি ও পরিচালকের সঙ্গে ব্যবসায় জড়িত হওয়ার পর তারা আমার বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে। বর্তমানে আর্থিক সংকটে পরিবার নিয়ে হতাশায় ভুগছি।

এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি অর্থ আত্মসাৎ মামলায় অ্যাসরোটেক্স গ্রুপের এমডি মো. আসাদুল ইসলাম এবং পরিচালক মো. আমির হোসাইনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।