
লক্ষ্মীপুর জেলা শহরে ‘ঝুমুর হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’ নামে একটি খাবার হোটেলে গরুর মাংস বলে ঘোড়ার মাংস বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। আদালত এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির ইয়াসিন আরাফাত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনায় ওই হোটেলের মালিক সবুজ, হোটেলের পরিচালনাকারী রিয়াজ এবং মাংস সরবরাহকারী কসাই চৌধুরী ওরফে শাহ আলমকে আসামি করা হয়েছে।
ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘খাবার হোটেলে গরুর মাংস বলে ঘোড়ার মাংস বিক্রি করে প্রতারণার অভিযোগে আবদুল কাদের (৪০) নামে এক ব্যক্তি মামলা করেছেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আদালতে তিন জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়। আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক তারেক আজিজ আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করার জন্য সদর মডেল থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
মামলার বাদী আবদুল কাদের সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের শফি মিয়ার ছেলে। মামলার এজাহার ও আদালত সূত্র জানায়, বাদী আবদুল কাদের জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন কাজে নিজ বাড়ি থেকে লক্ষ্মীপুরে আসা-যাওয়া করেন। অধিকাংশ সময় দুপুরের খাবার তাকে হোটেলে খেতে হয়। গত ১৭ মে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এলাকার ঝুমুর হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে যান। তখন হোটেলের কর্মচারীরা বলে, উন্নত মানের গরুর মাংস রয়েছে। বাদী ওই মাংসের অর্ডার দেন। খাওয়ার সময় তার সন্দেহ হয়। তিনি মামলার আসামি সবুজ ও রিয়াজের কাছে মাংসের বিষয়ে জানতে চান। তারা জানায়, ‘হোটেলে গরুর মাংসই বিক্রি হয়। সকালে কিনে এনে টাটকা গরুর মাংস রান্না করা হয়।’
দুদিন পর একটি অনলাইন গণমাধ্যমে ঝুমুর হোটেলে ঘোড়ার মাংস বিক্রি করা হয় বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি আবদুল কাদেরের নজরে পড়ে। তিনি জানতে পারেন, কসাই চৌধুরীর কাছ থেকে ঘোড়ার মাংস এনে ঝুমুর হোটেলে বিক্রি করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ হোটেলমালিক সবুজ ও কসাই চৌধুরীকে আটক করে। এরপর তদন্তে ঘটনাটি সত্য প্রমাণিত হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদী। এভাবে বহু মানুষের সঙ্গে হোটেল কর্তৃপক্ষ প্রতারণা করে আসছে। এজন্য আবদুল কাদের বাদী হয়ে ১৪ জুন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আদালতে তিন জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। গ্রেফতারি পরোয়ানার নির্দেশনা এখনও আমাদের হাতে আসেনি। নির্দেশনার চিঠি পেলেই আসামিদের গ্রেফতার করে যথাসময়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে।’