জাতীয়

যেসব কারণে রেজা কিবরিয়া ও নুরের বিরোধ চরমে

Is Jennifer Aniston currently in a relationship?

দীর্ঘদিন ধরেই শীর্ষ দুই নেতা রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক নুরের মধ্যে বিরোধ চলছিলো। দুজনের বিরুদ্ধেই বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সাথে কাজ করার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে। নুরের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো- আর্থিক অস্বচ্ছতা। এই মতবিরোধ এখন প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। দুই নেতার বিরোধে দলে অস্থিরতা বেড়ে যাওয়ায় রবিবার গুলশান দুই- এ কিবরিয়ার বাসার ছাদে বৈঠক ডাকা হয়।

আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠক শুরু হয় সন্ধ্যা ৭টায়। দলের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বৈঠকে আসেন দেড় ঘন্টা পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রেজা কিবরিয়া। তিনি বলেন, ৭টার বৈঠকে কেন সদস্য সচিব সাড়ে ৮টায় উপস্থিত হবেন? এর পর থেকেই উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় চলতে থাকে। এভাবে দীর্ঘ সময় ধরে চলা বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে রেজা কিবরিয়াকে মারতে উদ্যত হন গণঅধিকারের যুগ্ম আহ্বায়ক বিপ্লব পোদ্দার এবং অর্থ বিভাগের প্রধান শহিদুল হক ফাহিম। যার রেশ থাকে শেষ পর্যন্ত। রাত ৯টা নাগাদ এক পর্যায়ে রাগ করে উঠে বাসায় চলে যান রেজা কিবরিয়া। আর বৈঠকে ফেরেননি তিনি।

রবিবারের বৈঠকে শীর্ষ দুই নেতার দ্বন্দ্বের কোনো সমাধান হয়নি। পরদিন সোমবার রেজা কিবরিয়া বিদেশে চলে যান। তার অনুপস্থিতিতে নুরের সভাপতিত্বে আবারো মুলতবি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক তৎপরতার অভিযোগ আনা হয়। দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১ নাম্বার যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খাঁনকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করা হয়। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে ড. রেজা কিবরিয়াকে ফোন করলে তিনি জানান, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক পদে অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত অবৈধ। দেশে ফিরে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি। ফিরে এসে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবেন জানতে চাইলে বলেন, প্রয়োজনে নুরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

আরো পুড়ুনঃ  মামুনুল হকের সঙ্গে ঝর্ণার বৈধ বিয়ে হয়েছিল: আইনজীবী

রোববারের বৈঠকে এসব বিষয়ে গণমাধ্যমে আসার পরই দুজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দিতে থাকেন। নুরুল হক নুর অভিযোগ করেন, ড. রেজা কিবরিয়া দলের সিদ্ধান্ত না নিয়ে এককভাবে আলোচিত সংগঠন জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির উদ্যোগে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন। এতে বিব্রত গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। ইনসাফে যাওয়ায় রেজা কিবরিয়া অর্থ পাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন নুরুল হক। বিএনপি ভেঙে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আবদুস সাত্তার উকিল মডেলের নির্বাচন করতে গোয়েন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রেজা কিবরিয়া। তার ইচ্ছা দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া। দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন না তিনি।

প্রথম বৈঠকের পর ড. রেজা কিবরিয়াকে ফোন করা হলে তিনি জানান, বিদেশ থেকে যে টাকা-পয়সা আসে সেটার কোনো হিসাব দিতে রাজি নন নুর। এখানে অনেক টাকা আসে। প্রবাসীদের কমিটিতে নিজেকে তিনি প্রধান উপদেষ্টা বানিয়েছেন। সেখানে দলের আর কাউকে রাখেননি। প্রবাসীদের পুরো টাকা তিনি নিজেই রাখেন। দ্বিতীয় হচ্ছে, দলের মধ্যে অসন্তোষ মেন্দি এন সাফাদি ও উত্তরাঞ্চলে হিন্দু সমাজের নতুন রাষ্ট্র করতে চাওয়া শিপন বসুর সঙ্গে নুরের যোগাযোগটা কেন? সেটা কি আমাদের কোনো রাজনৈতিক সুবিধার জন্য নাকি তারা টাকা দিয়েছেন। তাকে টাকা দেওয়ার বিষয়টা নিয়ে দলের অনেকেরই সন্দেহ আছে। দুবাইয়ে মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে মিটিং করতে নুর ট্যাক্সি দিয়ে যাননি। তাকে গণঅধিকারের দুবাইয়ের আমাদের নেতারা গাড়ি চালিয়ে নিয়ে গেছেন। তারাই আমাদের কনফার্ম করেছেন যে, এ রকম মিটিং হয়েছে এবং মিটিং শেষে নুর একটা কালো ব্যাগ নিয়ে ফিরেছেন। তবে কালো ব্যাগে কী ছিল সে বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। আমাদের প্রশ্ন হলো, তুমি ইসরায়েলিদের সঙ্গে মিটিং করছে, এটার কারণ কী? কারণটা আমাদের বলো? তবে তিনি তা বলতে রাজি নন। এসব জানতে চাওয়ায় নুরসহ কয়েকজন আমার বিরুদ্ধে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির বিষয়টি সামনে আনে।

জানা গেছে, ইনসাফ কায়েম কমিটি নিয়ে মতবিরোধ ছাড়াও গত এক বছর ধরে ভিপি নূর ও রেজা কিবরিয়ার মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে। এ কারণে এ সময়ের মধ্যে গণঅধিকার পরিষদের কর্মসূচিতে রেজা কিবরিয়াকে তেমন দেখা যায়নি। এছাড়া দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তাকে গুরুত্বও দেওয়া হয়নি। তার কোনো মতামতের প্রতিফলন হয়নি। দল চলেছে ভিপি নুরের একক সিদ্ধান্তে। এবার কোণঠাসা রেজা কিবরিয়াকে একেবারেই বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত।

আরো পুড়ুনঃ  Kristen Stewart at the Toronto Film Festival 2015

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker