জাতীয়

মার্কিন মনোভাব বুঝে কৌশল চূড়ান্ত করবে বিএনপি

Is Jennifer Aniston currently in a relationship?

বাংলাদেশ নিয়ে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক রাজনীতির গতি-প্রকৃতি দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি। এ জন্য ঈদের পর যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের তিন কর্মকর্তার বাংলাদেশ সফরকে গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি।

দলের দায়িত্বশীল নেতারা জানান, এই সফরের পর যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব বুঝে চূড়ান্ত আন্দোলনের কৌশল প্রণয়ন করা হবে।

বিএনপির দুজন নীতিনির্ধারক কালের কণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠু করতে যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি ঘোষণা দেওয়ার পর এক দফার আন্দোলনের দিকে ঝুঁকেছে বিএনপি।

সেভাবে পরিকল্পনাও তৈরি করা হচ্ছে। সরকারবিরোধী চলমান আন্দোলনকে আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা ছিল। তার ভিত্তিতে ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে এক দফার আন্দোলনের বার্তা নিয়ে তৃণমূলে যাচ্ছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে আন্দোলনের চূড়ান্ত গতি-প্রকৃতি কী হবে তা আগামী মাসে মার্কিন তিন কর্মকর্তার সফরের পর পরিষ্কার হবে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নাগরিক নিরাপত্তা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া এবং অর্থনৈতিকবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জোসে ডাব্লিউ ফার্নান্দেজ আসছেন। এই প্রতিনিধিদলে মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু থাকছেন। প্রতিনিধিদলে ডোনাল্ড লু থাকায় সফরের তাৎপর্য অনেক বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতারা বলেন, বৈশ্বিক রাজনীতির কারণে বাংলাদেশের ব্যাপারে পশ্চিমা দেশগুলোর দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হচ্ছে।

ফলে সরকার বেশ চাপে আছে। এই সময় দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করতে চায় বিএনপি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির এক নেতা বলেন, এক দফার আন্দোলনের শুরুতে শক্ত কর্মসূচি না দিয়ে ধীরে ধীরে কঠোর হওয়ার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। এ নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে সব কিছু নির্ভর করছে বাংলাদেশ নিয়ে বৈশ্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর।

উপযুক্ত সময় মনে হলে যেকোনো সময় বড় কর্মসূচি নিয়েও মাঠে নামতে হতে পারে।
দলের কর্মকৌশল প্রণয়নে যুক্ত একাধিক নেতা বলেন, দলীয় কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সরকারবিরোধী কর্মসূচিতে যুক্ত করার লক্ষ্যে তারুণ্যের সমাবেশ করছে ছাত্রদল-যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দল। আগামী মাস থেকে কৃষক-শ্রমিক-তাঁতি-মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে পদযাত্রা হবে।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী জানান, ছয় বিভাগে এই কর্মসূচি হবে। আগামী ১৯ জুলাই দিনাজপুর, ২৮ জুলাই রাজশাহী, ৫ আগস্ট যশোর, ১২ আগস্ট হবিগঞ্জ ও বরিশালে ১৯ আগস্ট এই কর্মসূচি পালিত হবে। ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব বিষয়ে জনমত গড়ে তুলতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, দলীয় কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষ সম্পৃক্ত হচ্ছে। বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো মাঠে শক্ত কর্মসূচি দিয়ে আস্থা জাগাতে পারলে জনসম্পৃক্ততা আরো বাড়বে। কারণ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ নানা কারণে মানুষ সরকারের ওপর বিরক্ত। ফলে আস্থা সৃষ্টি করার মতো আন্দোলন করতে পারলে মানুষ মাঠে নেমে আসবে বলে ধারণা তাদের।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু কালের কণ্ঠকে বলেন, আন্দোলনের কর্মসূচির ব্যাপারে দলের নিজস্ব কিছু কৌশল থাকে। সেসব কৌশলের সঙ্গে বৈশ্বিক রাজনীতির গতি-প্রকৃতি এবং নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের চাওয়ার সঙ্গে সংগতি রেখে এক দফার ভিত্তিতে ঈদের পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, ‘গত কয়েক মাসে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সরকারবিরোধী যে কর্মসূচি হয়েছে, তাতে জনগণের অংশগ্রহণ অনেক বেড়েছে। আমাদের বিশ্বাস, আন্দোলনের এই তীব্রতা যখন বাড়বে তখন সরকার টিকে থাকতে পারবে না।’

বিএনপির নীতিনির্ধারকরা জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বেশির ভাগ নেতা এলাকায় চলে গেছেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ঈদ উদযাপন করতে গতকাল নিজ এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে গেছেন।

নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এটাই শেষ ঈদ। ঈদে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নাড়ির টানে নিজ নিজ এলাকায় যায়। দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত করতে এ সময়কে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া যেসব নেতাকর্মী কারাগারে আছেন, তাঁদের পরিবারের পাশে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয়ভাবে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, রাজশাহী বিভাগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু এবং দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ এবং আন্দোলনের ব্যাপারে জনমত সৃষ্টি করতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে তাঁরা ঈদের সময় এলাকায় থাকছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker