বিয়েতে কোরবানির মাংস দিয়ে মেহমানদারি করা যাবে?

কুরবানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তা শুধু মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের নিয়তেই আদায় করতে হয়।
এর ব্যতিক্রম হলেই কুরবানি হবে না। কিন্তু সমাজে অহরহ বলতে কিংবা ঘটতে দেয়া যায় যে, কুরবানি পরবর্তী ২/৩ দিনের মধ্যে বিয়েসহ অনেক বড় বড় অনুষ্ঠান উদযাপতি হয়।
তাতে কুরবানির মাংসও খাবার হিসেবে পরিবেশন করা হয়। আবার অনেককে বলতে শোনা যায়, এবার গরু বড় দেখে কিনতে হবে। কুরবানির পর অনুষ্ঠান আছে।
ঈদুল আজহায় সামর্থবান মুসলমানরা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করে থাকে। এটি ইসলামের একটি বিধান। কোরবানিকে ‘সুন্নতে ইবরাহিমি’ নামে অভিহিত করা হয়। আল্লাহ তাআলা কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন- ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন।’ (সুরা কাউসার : ২)
আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের এ ইবাদত নষ্ট হতে পারে সামান্য ভুলে। কোরবানির ক্ষেত্রে এমনই একটি ভুল হচ্ছে— মাংস খাওয়ার নিয়ত। কারো নিয়ত যদি হয় কোরবানির মাংস দিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান করা, তাহলে তার কোরবানি শুদ্ধ হবে না। কারণ, এতে আল্লাহর বিধান পূর্ণ করার জন্য কোরবানি করা হচ্ছে না, বরং আত্মীয়দের খাওয়ানোর জন্য পশু জবাই করা হচ্ছে। তাই এভাবে নিয়ত করে কোরবানি করলে ওয়াজিব আদায় হবে না।
তবে যদি আল্লাহর হুকুম পালন করার উদ্দেশ্যে কোরবানি করা হয়ে থাকে, পরে কোরবানির পশুর মাংস দিয়ে বিয়ের মেহমানদারি করা হয়, তাহলে কোরবানি শুদ্ধ হবে। আবার মেহমানদের খাওয়ানোও বৈধ হবে।
কেউ যদি বড় পশুর সাত ভাগের মধ্যে আলাদা অংশ ওলিমার জন্য রাখে, তাহলে ওলিমার অংশ রাখার কারণে কোরবানি নষ্ট হবে না। বরং এতে সব শরিকের কোরবানি শুদ্ধ হয়ে যাবে। (আজিজুল ফতোয়া: ১/৭১৮, ফতোয়ায়ে শামি: ৬/৩২৬)
এখানে মাসয়ালা দুটি আলাদা। একটি হলো, কোরবানির অংশটিকে বিয়ের মেহমানদারীর জন্য কোরবানি করা। আর দ্বিতীয় মাসয়ালা হলো, কোরবানির অংশ নয়, বরং কোরবানির পশুতে আলাদা অংশে ওলিমার অংশ রাখা। প্রথম সূরতে কোরবানি শুদ্ধ হবে না। দ্বিতীয় সুরতে শুদ্ধ হবে। (তথ্যসূত্র: ফতোয়ায়ে আলমগিরি, তাতারখানিয়া, দুররুল মুখতার, বাদায়েউস সানায়ে)